বিশ্বের ১২০টি দেশের মতো প্রবাসে থাকাদের ভোট দেয়ার দাবি জানিয়ে আট প্রস্তাব দিয়েছে প্রবাসী অধিকার আন্দোলনের নেতারা।নেতারা বলছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত, মালদ্বীপ, ভুটানসহ এশিয়ার প্রায় ২০টি দেশ তাদের প্রবাসী নাগরিকদের ভোটাধিকারের ব্যবস্থা করেছে। বাংলাদেশের প্রবাসীদের জন্য এই ব্যবস্থা করতে হবে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে নতুন বাংলাদেশ গঠিত হয়েছে। এই আন্দোলন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, বাহরাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে আন্দোলনে শরিক হন।
তারা বিদেশ থেকে জুলাই মাসজুড়ে এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধ করে দেন। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়। বিশাল আর্থিক সংকটে পড়ে সরকার। স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনে প্রবাসীদেরও অনেক অবদান রয়েছে। তাই বাংলাদেশ নামক ‘রাষ্ট্র সংস্কারে’ প্রবাসীদের ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সময় এসেছে তাদের ভোটের অধিকার সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়ন করা। এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে প্রবাসী ভোটারদের অবস্থান সম্র্পকে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে-বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। এর মধ্যে ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন পুরুষ আর ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন নারী ভোটার। আর ৮৩৭ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন। (১৫ জানুয়ারি ২০২৩ দৈনিক ইত্তেফাক)। এই ১১ কোটি ৯১ লাখ ভোটারের মধ্যে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী ভোটার কর্মসূত্রে বিদেশে অবস্থান করছেন, যা মোট ভোটারের শতকরা ১৩ শতাংশ।
• প্রবাসে ভোট দেয়ার অধিকারের দাবিগুলো হলো: ১. বিদেশে প্রবাসীদের অংশগ্রহণে এসএসসি, এইচএসসি, অনার্স এমনকি বিসিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তাহলে জাতীয় নির্বাচনে কেনো প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেনা? বাংলাদেশের অ্যাম্বাসি/কনস্যুলেট অফিসে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ২. দেশের অর্থনীতিতে যেহেতু প্রবাসীদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে সে কারণে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার মাধ্যমে কারা জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হবেন সে ব্যাপারে প্রবাসীদের মতামত নিতে হবে।
৩. আমেরিকা, ইউরোপ, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াতে জাতীয় নির্বাচনের আগের দিন এবং যে সব দেশে বাংলাদেশের সাথে সময়ের পার্থক্য কম সেই সব দেশে একই দিনে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। এশিয়ার দেশগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে সময়ের পার্থক্য খুব বেশি না, তাই এই সব দেশগুলোতে একই দিন ভোট হতে পারে। নির্বাচনের দিন ‘পোলিং বুথ’ স্থাপন করতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস অফিসে। ভোট দেওয়ার পর দূতাবাস অফিসে সবার সামনে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ভোটগণনা করতে হবে। ভোটের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন প্রিসাইডিং, পোলিং ও রিটার্নিং অফিসার।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post