প্রবাসী স্বামী ইতালির গ্রিন পাসপোর্ট পেয়েছেন। আট বছরের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে প্রবাসী স্বামীর কাছে যাবেন তানিয়া আফরোজ (২৮)। সবকিছু ঠিকঠাক। ভিসার কাজে মা তহুরা বেগমকে (৫৫) নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন তানিয়া। পথিমধ্যে সাতসকালেই মহাসড়কে সলিলসমাধি হলো মা-মেয়ের।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জ অংশের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতি এলাকায় তাদের বহনকারী যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ ছয়জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও ১০ জন।
নিহত তানিয়া আফরোজ খুলনা শহরের শিপইয়ার্ড স্কুলের সাবেক শিক্ষক আবু হাসানের মেয়ে। তার শ্বশুরবাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে। তার স্বামীর নাম আসলাম উদ্দিন কুদ্দুস। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইতালিতে রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ইতালির গ্রিন পাসপোর্ট পেয়েছেন।
রোববার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিহতদের মরদেহ বুঝে নিতে এসে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন তানিয়া আফরোজের স্বজন রেজা। তিনি বলেন, তানিয়া আমার কাজিন। ওর আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ওর স্বামী ইতালিতে সদ্য গ্রিন পাসপোর্ট পেয়েছে। তানিয়া তার স্বামীর কাছে চলে যাবে কিছুদিনের মধ্যে এমন কথা ছিল। সব ঠিকঠাক। আজকে ঢাকায় যাচ্ছিল ভিসার কাজে। ওর মেয়েকে বাবার বাসায় রেখে মাকে সঙ্গে করে ঢাকায় যাচ্ছিল। সকালে সাড়ে ৬টায় ইমাদ পরিবহনের একটি গাড়িতে রওনা হয়েছিল। সকাল সাড়ে ৮টার পর আমরা খবর পাই তাদের গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। তখনো জানতাম না তানিয়া কিংবা তার মা মারা গেছে। আমরা প্রথম সংবাদের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলাম তানিয়ার মা মারা গেছেন। এখানে এসে জানতে পারলাম ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তানিয়া মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকায় কাজ শেষ করে বিকেলেই ফেরার কথা ছিল তাদের। এখন ফিরছে লাশ হয়ে।
এর আগে, সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। গুরুতর আহত হন আরও ১০ জন। এর মধ্যে চিকিৎসারত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এতে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ছয়জনে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post