সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল ৫ আগস্টের পর থেকে বন্ধ রয়েছে। এই পেজ ও চ্যানেলের পাসওয়ার্ড জানেন শুধু সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও দলটির নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। ইতিমধ্যে কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হয়েছেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলক ৬ আগস্ট দেশ ছাড়ার সময় বিমানবন্দরে আটক হন। এরপর ১৪ আগস্ট হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
৫ আগস্টের পর থেকে বন্ধ আইসিটি বিভাগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন গণমাধ্যমকে বলেন, এগুলো সাবেক প্রতিমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে চালাতেন। তিনি পাসওয়ার্ড দিয়ে যাননি। তবে তাঁরা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছেন।
আইসিটি বিভাগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল গত ১০ বছরে ব্যাপক সক্রিয় ছিল। বিভাগ–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য ও কর্মসূচি সম্পর্কে নিয়মিত পোস্ট দেওয়া হতো। পলক কোথায় গিয়েছেন, কোন সভা করেছেন, কী বক্তব্য দিয়েছেন—এসব তথ্য, ছবি ও ভিডিও দেওয়া হতো নিয়মিতভাবে। কিন্তু সরকার পতনের পর ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে তাদের অফিশিয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের লিংক দেওয়া আছে। কিন্তু সেখানে ক্লিক করলে কিছু পাওয়া যায় না।
সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে সক্রিয় এবং অনুসারীর দিক দিয়ে শীর্ষে ছিলেন সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ। ফেসবুকে তাঁর নিজের নামেও ভেরিফায়েড পেজ ছিল। সেটাও এখন বন্ধ।
আইসিটি বিভাগ সূত্র জানায়, তাদের অফিশিয়াল ফেসবুক ফেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ জুনাইদ আহ্মেদের কাছেই ছিল। ঢাকা লাইভ নামের একটি স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল মার্কেটিং টিম আইসিটি বিভাগ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করত।
জুনাইদ আহ্মেদ পলক, তাঁর স্ত্রী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত
ঢাকা লাইভকেও এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ বন্ধ। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তাদের প্রধান কার্যালয়ে গত রোববার গিয়ে তালাবদ্ধ দেখা যায়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আইসিটি বিভাগের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল কোনো ব্যক্তির সম্পদ নয়, এটি সরকারের সম্পদ। এটির নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা সরকারি বিধি মেনে হওয়া উচিত। কোনো ব্যক্তির পরিবর্তনে পেজ ও চ্যানেল হাতছাড়া হবে, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
বিষয়টি নিয়ে আইসিটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা অর্ন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আইসিটি বিভাগের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রাণালয়ের কাছে ছিল না। সাবেক প্রতিমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে পরিচালনা করতেন। তিনি চলে যাওয়ার সময় পেজগুলো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পুনরায় চালুর জন্য মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
নাহিদ আরও বলেন, ‘যতুটুকু জেনেছি, পেজ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই পেজ থেকে কার্যক্রম শুরু করা হবে।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post