বাংলাদেশের বেশ কিছু জেলা স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে অনেক এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে আছে।
তাদের অনেকেরই পরিবারের সদস্যরা বন্যা কবলিত এলাকায় বসবাস করেন। বন্যার তাণ্ডব শুরু হওয়ার পর থেকে তারা আর নিজেদের প্রিয়জনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। পরিবারের সদস্যরা বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, এই অনিশ্চয়তা তাদেরকে দিনরাত উদ্বিগ্ন রাখছে।
শারজাহবাসী আকরামের জীবন এখন এক অন্ধকার অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিদ্রাহীন রাত কাটাচ্ছেন, তার মন কেবল একটাই চিন্তায় ভরা – তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা। খালিজ টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আকরাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছেন, “গত তিনদিন ধরে আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।”
শেষবার যখন তারা কথা বলেছিল, তখন তার পরিবার জানিয়েছিল যে তাদের এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে এবং পানি দ্রুত বাড়ছে। সেই থেকে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। আকরাম বলেন, “আমরা ফোনে সার্বক্ষণিক নজর রাখছি, খবর দেখছি কিন্তু তাদের বেঁচে আছে কি না তাও জানি না।”
“আমার গ্রামের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। খবর পড়ে জানতে পেরেছি আমাদের পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। তারা যতটুকু পেরেছেন ততটুকু নিয়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।”
আশরাফুল মোবারক নামের ৩৪ বছর বয়সী আরেক প্রবাসী। থাকেন আমিরাতের দেইরাতে। তিনি ফেনীতে বসবাস করা তার পরিবারের জন্য খুবই চিন্তিত। আশরাফুল বলেছেন, “২১ সন্ধ্যায় আমার মা জানায় পানি বাড়িতে প্রবেশ করেছে এবং তারা উপরের দিকে উঠে গেছে। কিন্তু ২৩ তারিখ যখন আমি আবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি তখন আর কল ঢুকছিল না।”
তবে পরবর্তীতে মোবারক তার গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন তার পরিবারের সদস্যরা ভালো আছেন। তবে বাড়িঘরসহ সবকিছু তলিয়ে গেছে।
তার এই অসহায় অবস্থা সবার মনে দুঃখ ও চিন্তা জাগিয়ে তুলেছে। এই প্রবাসীদের মতো হাজার হাজার প্রবাসীরা হয়তো একই দুঃস্বপ্ন দেখছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে অনেকে নিজেদের প্রিয়জনদের খোঁজে হাবুডুবু খাচ্ছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post