বাংলাদেশ হাইকোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ আদেশ জারি করেছেন, যা দেশের কর্মসংস্থান খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। আদালত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশ দিয়েছেন মালয়েশিয়া কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে, লিখিত আদেশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সংস্থা দুটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার (২১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজিমুদ্দীন ও মো. আবুল কাশেম সেলিম।
জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সি মেসার্স ইউনাইটেড এক্সপোর্ট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী এস এম রফিকের পক্ষে গত ১৫ জুলাই এ রিট আবেদনটি করা হয়।
এরপর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া সিন্ডিকেটমুক্ত করতে ও সব রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছু কর্মীদের থেকে নির্ধারিত ব্যয়ের কয়েকগুণ বেশি টাকা নেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়।
এছাড়া মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী কর্মীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধে একটি পরিপূর্ণ নীতিমালা বা নির্দেশিকা তৈরির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং সব প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও মালয়েশিয়া যেতে না পারা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছিলেন আদালত।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাণিজ্য সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, বিএফআইউ প্রধান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালককে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, ২০০৯ সালে প্রথম দফায় বন্ধ হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরপর ২০১৬ সালের শেষে তা আবার খোলা হয়। তখন বাংলাদেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি চক্র গড়ে উঠেছিল। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আবার বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। ২০২২ সালে আবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলে।
চলতি বছর মার্চে মালয়েশিয়া জানায়, মালয়েশিয়া সরকার চলতি বছরের মার্চ মাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে। তারা জানিয়েছে যে, দেশটি আপাতত আর কোনো নতুন শ্রমিক নেবে না। এই নিষেধাজ্ঞা কেবল নতুন নয়, বরং আগে থেকে অনুমোদন পেয়েছেন এমন শ্রমিকদের জন্যও কিছু শর্ত আরোপ করেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
Discussion about this post