লিভার আমাদের অঙ্গের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এটি প্রোটিন, কোলেস্টেরল এবং পিত্ত উৎপাদন, ভিটামিন, খনিজ এবং এমনকি কার্বোহাইড্রেট সংরক্ষণের মধ্যে বিভিন্ন ধরণের প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদন করে। এমন কিছু খাদ্য এবং জীবন যাপনের অভ্যাস আছে যেগুলো আমাদের অজান্তেই লিভারের বড়ধরনের ক্ষতি সাধন করছে।
লিভারের সবচেয়ে বড় শত্রু মদ। তেল-চর্বি এবং ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারও লিভারের ক্ষতি করে। আপনার লিভারের আকার যদি ইতিমধ্যেই বেড়ে গিয়ে থাকে, ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে বা এসজিপিটি ও এসজিওটির মতো মৌলিক লিভার পরীক্ষায় কোনো গণ্ডগোল ধরা পড়ে থাকে তাহলে আপনাকে এখনই সতর্ক হতে হবে। আপনার লিভারকে এর স্বাভাবিক আকার ও স্বাস্থ্য ফিরিয়ে দিতে হবে।
লিভার বেশ বড় একটি অঙ্গ। ফলে এটির ক্ষয়-ক্ষতি হতে যেমন দীর্ঘ সময় লাগে তেমনি এটি ভালো হতেও দীর্ঘ সময় লাগে। তবে একবার যদি সিরোসিস হয়ে যায় তাহলে লিভার ভালো করা কঠিন হয়ে পড়ে। সুতরাং খুব বেশি দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই আপনার জীবন-যাপন ও খাদ্যাভ্যাসে মৌলিক কিছু পরিবর্তন আনুন লিভারকে সুস্থ রাখার জন্য।
প্রতিদিনের অনিয়মিত খাবার বা কিছু বদ অভ্যাস লিভারের ক্ষতি করে থাকে। আবার এমন কিছু খাবার আছে যা নিয়মিত খেলে আপনার লিভার সুস্থ থাকবে। লিভারকে সুস্থ রাখতে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ খাবারের তালিকা নিচে দেওয়া হলো,
[the_ad id=”652″]
১, কফি লিভারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে, সমস্ত ক্ষেত্রে প্রদাহ হ্রাস করার সময়। এটি লিভারের রোগ, ক্যান্সার এবং ফ্যাটি লিভার হওয়ার ঝুঁকিও কমায়।
২, বিট-রুটের রস লিভারকে অক্সিডেটিভ ক্ষয় এবং প্রদাহ থেকে রক্ষা করে, এর প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন এনজাইমগুলি বাড়িয়ে তোলে।
৩, বাদাম খাওয়া এনএএফএলডি (NAFLD) রোগীদের ক্ষেত্রে লিভারের এনজাইমের উন্নত মাত্রার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। বিপরীতভাবে, কম বাদাম খাওয়াকে এই রোগটি হওয়ার ঝুঁকির সাথে যুক্ত করা হয়েছে।
৪. তৈলাক্ত মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ। তৈলাক্ত মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড লিভারে অতিরিক্ত চর্বি গঠনে বাধা প্রদান করে এবং লিভার এনজাইমের সঠিক মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই যাদের ফ্যাটি লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা সপ্তাহে অন্তত দুই দিন তৈলাক্ত মাছ যেমন ইলিশ, টুনা, সারডিন, কড মাছ খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
৫. জলপাই তেলের ব্যবহার লিভারে ফ্যাটগুলির মাত্রা হ্রাস করে, রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং লিভারের এনজাইমের মাত্রাকে উন্নত করে।
আরও পড়ুনঃ মোবাইল ফোন করোনামুক্ত রাখবেন যেভাবে
এছাড়াও, বিভিন্ন রঙের শাকসবজি, ফল, লাল আটার রুটি বা লাল চালের ভাত এবং সঠিক পরিমাণে প্রোটিন, খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন রাখতে হবে। চিনি এবং চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস, ওজন নিয়ন্ত্রণ বা লিপিড প্রোফাইল ঠিক রাখা কোনো কঠিন বিষয় নয়। আর এই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারলে লিভার থেকে ফ্যাট খুব সহজে দূর হবে। মনে রাখবেন, লিভার ভালো রাখতে ফিট থাকার কোনো বিকল্প নেই।
লেখকঃ উম্মে হাফসা ইভা,
খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী
https://www.youtube.com/watch?v=H320x19a9VA
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post