মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্য ভারতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। একই সঙ্গে ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সাহায্য করেছেন বলে প্রভু হওয়ার কোনো চেষ্টা করবেন না। জনগণের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করেন। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের (ভারত) সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখবে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যার নির্দেশদাতা শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীরসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা বক্তৃতা করেন। সমাবেশে মুক্তযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়।
মেজর হাফিজ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর ছাত্ররা সাটিফিকেট নিতে আসেননি। ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। আর এখন মুক্তিযোদ্ধা এসে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ। এত মুক্তিযোদ্ধা এলো কিভাবে?
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে ২৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে। যেই গুলি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা হয়েছে। অথচ মিয়ানমার যখন সীমান্তে হামলা করল, তখন তো আরাকানে গিয়ে একটা হেলিকপ্টার উড়তে দেখি নাই।’
হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নামে যে ক্যান্টনমেন্ট করা হয়েছে, অবিলম্বে সেটি বন্ধ করতে হবে।’ বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নতুন সদস্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসাবে শুক্রবার শপথ নিয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তার নেতৃত্বে একটি তদন্ত হয়েছিল বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকা-ের ঘটনা নিয়ে। তিনি সঠিকভাবে কারণ এবং সমাধান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এই রিপোর্ট আলোর মুখ দেখেনি। আমরা চাই, তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত যে সত্য অনুসন্ধান রিপোর্ট তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।’
গত ১৬ বছরের পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম বলে মন্তব্য করে হাফিজ বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য মারা গেছেন, এটাকে আমরা সমর্থন করি না। এর জন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী।’ পুলিশকে জনগণের বাহিনীর হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে শুক্রবার রাতে টেলিফোনে কথা হয়েছে। শুধু একটি কথা বলেছি, এবার নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করবে। কিন্তু আমরা যেন আওয়ামী লীগ না হই, আমাদের জিয়াউর রহমানের দল হতে হবে। ক্ষমতায় গিয়ে কোনো চাঁদাবাজি, দুর্নীতি করা যাবে না।
মেজর হাফিজ আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সমর্থন করি। আমরা এই বিপ্লবের একটি সঠিক পরিণতি চাই। আওয়ামী লীগের মতো কোনো কলঙ্ক যাতে তাদের স্পর্শ করতে না পারে।
এদিকে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ ও যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেন, ‘হারুন- বিপ্লব কোথায়? তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। যারা এই ছাত্র আন্দোলনে গুলির নির্দেশ দিয়েছে তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post