ওমানে দিনদিন ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে মহামারী করোনা। দেশটিতে করোনার নতুন ধরনের রোগী আজও ৬ জন শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বেশ চিন্তিত দেশটির সুপ্রিম কমিটি। করোনা নিয়ন্ত্রণে একের পর এক কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেও লাগাম টানা যাচ্ছেনা করোনার।
করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আজ জরুরী বৈঠক করে ওমান সুপ্রিম কমিটি। বৈঠকে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ আহমেদ বিন মোহাম্মদ আল সাঈদি বলেন, “আপাতত লকডাউন দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেই, বাণিজ্যিক কার্যক্রম আপাতত উন্মুক্ত থাকলেও সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
ওমানের বিমানবন্দর পুনরায় বন্ধের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দর বন্ধের ব্যাপারে কমিটি গবেষণা করছে। যেহেতু বিমানবন্দর বন্ধ হলে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে, সুতরাং এ ব্যাপারে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, “অনেকের অবস্থা দেখে মনে হয় যেনো করোনা মহামারী শেষ হয়ে গেছে, এখনো অনেককে দেখা যায় আলিঙ্গন করতে এবং হ্যান্ডসেক করতে, যা খুবই দুঃখজনক!” দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে ওমানে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় একে অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং ভীতিজনক লক্ষণ বলে আখ্যায়িত করেছেন মন্ত্রী।
এ সময় মন্ত্রী ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে বলেন, ফাইজার বায়োনটেকের ভ্যাকসিন রফতানিতে সাময়িক বাধা সৃষ্টি হয়েছে। তবে যারা প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন, আপাতত তারা অন্য কোনো কোম্পানির ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবেনা।
বিশ্বের যেকোনো কোম্পানির তৈরি ভ্যাকসিন ওমান প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই আমরা তা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা যাচাই বাছাই করবো। আমরা শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে কোনো ভ্যাকসিন ওমানে অনুমোদন দিবোনা।”
আরো পড়ুনঃ ওমান প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ ঘোষণা
করোনার উপসর্গ রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের বাড়ির বাহিরে না যেতে অনুরোধ জানিয়েছেন মন্ত্রী, এমনকি নিজ কর্মস্থলেও না যেতে বলেছেন তিনি। ওমানে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে প্রচুর কার্যক্রম প্রভাবিত হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
সেইসাথে এই মুহূর্তে অতি প্রয়োজন ব্যতীত ভ্রমণে বের না হতেও অনুরোধ জানান মন্ত্রী। এখন থেকে ওমানের যেসকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুপ্রিম কমিটির আইন লঙ্ঘন করবে, তাদের নাম প্রকাশ করা হবে বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বৈঠকে সুপ্রিম কমিটির আরেক সদস্য ডাঃ অমল আল মানি বলেন, “করোনার ইতিমধ্যেই একাধিক ধরনের দেখা মিলছে ওমানে, তবে সর্বশেষ যে ধরন মিলছে, এটি তরুণদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপজ্জনক।”
তিনি আরো বলেন, ওমানে নতুন সংক্রমিত ব্যক্তিরা অন্য দেশ থেকে ওমান প্রবেশ করেছেন। নতুন এই ধরনটি ব্রিটেন, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকাতেও পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি। ডাঃ অমল আরো বলেন, পুরানো বা নতুন স্ট্রেনের জন্য সুনির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই, তবে পরীক্ষা নেওয়ার পরে একজন ব্যক্তির শরীরে কি ধরণের স্ট্রেন রয়েছে তা খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ ওমানের করোনা ব্রেসলেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
ওমানে করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ব্যক্তিদের জন্যেও মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক দুরুত্ব মেনে চলা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ আহমেদ বিন মোহাম্মদ আল সাঈদি। সোমবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রী এই কথা বলেন। তিনি বলেন, “একটি ভ্যাকসিন আপনাকে ভাইরাসে আক্রান্ত হতে বাধা দিতে পারে তবে এটি অন্যকে ছড়িয়ে দেওয়া থেকে বিরত রাখবে না।”
এ সময় ওমানে পুনরায় লকডাউনের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, “লকডাউন হলো সর্বশেষ পদক্ষেপ। আপাতত গভীরভাবে করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তবে লকডাউন যেন না দিতে হয়, সেই প্রচেষ্টা করা হচ্ছে।”
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post