ক্যাটাগরি অনুযায়ী ওমানের কিছু পেশায় প্রবাসীদের ভিসার ফি বাড়ালো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। বুধবার (২৭-জানুয়ারি) দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নতুন ভিসার মূল্যের কথা জানায় জনশক্তি মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে শ্রম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্ধিত নিয়োগ ফি গুলোর মধ্যে রয়েছে:
উচ্চ পদস্থ পেশায় ভিসা প্রতি খরচ পড়বে ২ হাজার এক ওমানি রিয়াল,
মাঝারি স্তরের পেশাগুলিতে ১ হাজার এক ওমানি রিয়াল,
প্রযুক্তিগত এবং কারিগরি পেশার ভিসা মূল্য পড়বে ৬০১ রিয়াল,
জেলে পেশায় ৩৬১ রিয়াল,
অঘোষিত পেশায় ৩০১ রিয়াল।
একই আরবির অধীনে এক থেকে তিনজন গৃহকর্মী হলে ভিসা প্রতি খরচ পড়বে ১৪১ রিয়াল, চারের অধিক হলে: ২৪১ রিয়াল খরচ হবে।
একইভাবে কৃষক এবং উটের জকি এক থেকে ৩ জন হলে ভিসা প্রতি খরচ পড়বে ২০১ রিয়াল, চারের অধিক হলে ৩০১ রিয়াল পড়বে ভিসা মূল্য।
কোনও কর্মীর ডেটা পরিবর্তনের ফি ৫ রিয়াল, একজন কর্মীকে বর্তমান স্পন্সর থেকে স্থানান্তর ফি বাবদ খরচ পড়বে ৫ ওমানি রিয়াল।
প্রেস ব্রিফিংয়ে শ্রম-মন্ত্রী বলেন, করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে কম খরচে প্রবাসী কর্মীদের নিয়োগ দেওয়ার বিকল্প নেই। একইসাথে দেশটির বেসরকারি খাতের দক্ষ ওমানি নাগরিকদের নিয়োগের সেরা সময় এটি।
চলতি বছরের শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শ্রম-মন্ত্রী জানান, “শ্রমবাজারের শর্ত সংশোধন করতে এবং চাকরি প্রত্যাশীদের সংখ্যা বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে দুইটির মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করা যাবে।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে যে, “চাকরির স্থানীয়করণ, প্রবাসী কর্মী আনার উচ্চ ব্যয় এবং বিভিন্ন খাতে প্রবাসীর পরিবর্তে ওমানি নাগরিকদের নিয়োগে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। একইসাথে দেশে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রেও কাজ করে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।”
এদিকে ওমানের পোশাক খাতেও করা হয়েছে ওমানিকরণের প্রস্তাব। সম্প্রতি ওমানের শুরা কমিটিতে দেশটির পোশাক খাতকে শতভাগ ওমানিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কমিটির যুব ও মানবসম্পদ বিভাগ মহিলাদের ফ্যাশন ডিজাইন, সেলাই এবং সূচিকর্মে ওমানি মহিলাদের উত্সাহিত করতে কাজ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
ওমানি নারীদের কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নতুন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব নসর বিন আমের আল হোসনি, বাণিজ্য, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ওমান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিরা এগিয়ে আসবে বলে জানানো হয়েছে।
কমিটির প্রধান ইউনুস বিন আলী আল মান্ধারীর বলেন, যারা মহিলা সেলাইয়ের দোকানগুলি নিয়ন্ত্রণ করছেন তাদের এই খাতে ওমানিকরণে সবচেয়ে ভূমিকা রাখতে হবে।
তাদের সঠিক মতামতের ভিত্তিতেই এই খাতটিতে ওমানিকরণের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির ফ্যাশন ডিজাইন, টেইলারিং এবং সূচিকর্মের পেশাকে শতভাগ ওমানি মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত করার চেষ্টা করছে শুরা কমিটি। কমিটির প্রস্তাবে দেশের ফ্যাশন ও পোশাক শিল্পকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে একইসাথে খাতটির গুণগত মানের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে।
কমিটি জানিয়েছে, ওমানের ফ্যাশন এবং পোশাক খাতের উন্নয়নের তদারকি করতে সহায়তা করবে নতুন এই প্রস্থাবণা। এর মধ্যে এটি ওমানকে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।
আরো পড়ুনঃ বিমানের শিডিউল বিপর্যয়, চরম ভোগান্তিতে ওমান প্রবাসীরা
একই সাথে ওমান ফ্যাশন শিল্পের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ হিসাবে গড়ে উঠবে। এই খাতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক গুরুত্ব, প্রয়োজনীয় শিক্ষামূলক এবং প্রশিক্ষণ কোর্স এবং এটি কীভাবে দেশে অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণে সহায়তা করবে সে সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে কর্মসূচি চালু করার পরামর্শ দেয় শুরা কমিটি। দেশটির এই খাতকে ওমানীকরণে সকল প্রচেষ্টা চালানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post