ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির একটি হিন্দু গোষ্ঠী প্রত্যেক বছর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মদিন পালন করে। এবার হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তার জন্য মঙ্গলবার দিল্লিতে পূজা-অর্চনা করেছে এই গোষ্ঠীটি। তারা বলেছেন, বিশ্বকে ‘র্যাডিক্যাল ইসলাম’ থেকে কেবল তিনিই রক্ষা করতে পারেন।
হিন্দু সেনা নামের ওই সংগঠনের প্রায় ৫০ জনের মতো সদস্য দিল্লির একটি মন্দিরে পূজা-অর্চনায় অংশ নেন। এ সময় ক্ষমতা ও নিরাপত্তার দেবীখ্যাত বগলামুখীর একটি মূর্তি সামনে রেখে পূজা দেন তারা। আর এই মূর্তির পাশে রাখা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি সংবলিত একটি পোস্টার। যেখানে লেখা ছিল, ট্রাম্প দীর্ঘজীবি হন।
পূজার সময় মন্দিরের পুরোহিতরা ট্রাম্পের ছবিতে কপালে সিঁদুরের চিহ্ন লাগিয়ে দেন এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করে আগুনে উপাসনা করেন। দিল্লিতে ট্রাম্পের নিরাপত্তার জন্য আয়োজিত এই পূজা-অর্চনা সাত দিন ধরে চলবে বলে জানিয়েছে হিন্দু সেনা।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে প্রবেশের পর থেকে গোষ্ঠীটি প্রত্যেক বছর ট্রাম্পের জন্মদিন উদযাপন করে আসছে। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কেক কাটার পাশাপাশি প্রত্যেকের মাথায় থাকে ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির ক্যাপও। এর আগের দুই নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের জন্য দিল্লিতে অগ্নিপূজারও আয়োজন করেছিল গোষ্ঠীটি।
মঙ্গলবারের পূজা-অর্চনায় নেতৃত্বদানকারী পুরোহিত বেদ মূর্তিনন্দ সরস্বতী বলেন, একজন বিশ্বনেতা হিসেবে কেবল ট্রাম্পেরই ইসলাম ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস আছে।
মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবরের নামানুসারে রাজধানী দিল্লির একটি রাস্তার নামফলক মুছে ফেলার পর গত জানুয়ারিতে ভারতীয় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিল এই গোষ্ঠীটি। ভারতের হিন্দু গ্রুপগুলো মুসলিম মুঘলদের হামলাকারী হিসেবে বিবেচনা করে। যারা হিন্দুদের পরাজিত করে তাদের ওপর ইসলাম চাপিয়ে দিয়েছিল বলে মনে তারা তারা।
হিন্দু সেনার সদস্যরা বলেছেন, তারা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে গোষ্ঠীটির ওয়েবসাইট বলা হয়েছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ‘‘কল্যাণ ও উন্নতির’’ জন্য কাজ করে তারা।
প্রায় ২০ কোটি মুসলমানের আবাসস্থল ভারত। যা একক কোনও দেশে মুসলিম জনসংখ্যার হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম। ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা, বিরোধী রাজনীতিক ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলমানরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন।
কিন্তু দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তারা দেশের সব সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য কাজ করে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post