সাজানো হয়েছে বিয়ের গেট। আসতে শুরু করেছে আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা। কিছুক্ষণ পরই রওয়ানা হবে বিয়ের বরযাত্রী। ঠিক এমন সময় হাজির বরের প্রথম স্ত্রী। শুরু হয় হুলুস্থুল কাণ্ড। এক পর্যায়ে মারধর করা হয় প্রথম স্ত্রীকে, পরে বাড়ি থেকেই পালিয়ে যান বর সেজে থাকা আল আমিন।
শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের উত্তর শিরখাড়া গ্রামে। অভিযুক্ত আল আমিন ওই এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি ইতালি প্রবাসী।
জানা যায়, ৩ বছর আগে অনার্স পড়ুয়া মেয়েটির সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ইতালি প্রবাসী আল আমিনের। এরপর প্রেমের সম্পর্ক হলে, দুজনের পরিবারকে জানানো হয়। পরে আল আমিন ইতালি থাকা অবস্থাতেই মোবাইল ফোনে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মেয়েটিকে নিয়েও আসা হয় স্বামীর বাড়িতে। কিছুদিন থেকে পরে আবার মেয়েটি বাবার বাড়িতে যায়।
এরমধ্যেই গত একমাস আগে ইতালি থেকে বাড়িতে আসেন আল আমিন। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেন।
ভুক্তভোগী মেয়ে বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আল আমিনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছে। আমাকে কিছু না জানিয়ে আল আমিন অন্যত্র বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি কিছুতেই তা মেনে নিতে পারছি না। আমি এখানে আসায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমি প্রয়োজনে থানায় যাব, থানা পুলিশ সহযোগিতা না করলে, আমি আদালতে যাব। আমি আমার স্বামীর স্বীকৃতি আদায় করেই ছাড়ব।’
অভিযুক্ত আল আমিনের বাবা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমার ছেলের সঙ্গে ওই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে। কিন্তু ডির্ভোস দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আমার ছেলেকে এখন আমরা অন্য জায়গাতে বিয়ে করাতে চাই। সেই প্রস্তুতিও ঠিকভাবে নেয়া হয়েছে। মেয়েটি খারাপ, এজন্য তাকে আমার বাড়িতে আর তুলবো না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য নুর হোসেন বলেন, ‘আল আমিন ভুল বুঝে ওই মেয়েটিকে বিয়ে করেছিল। পরে সে আরেক ছেলের সঙ্গে চলে গেছে, শুনেছি সেই ছেলের সঙ্গে আবার মেয়েটির বিয়েও হয়েছে। এজন্য এ বাড়িতে মেয়েটিকে আর গ্রহণ করা হবে না।’
আল আমিনের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য জানান, প্রয়োজনে মামলা হবে। আইনগতভাবে সমাধান হবে। তবুও ওই মেয়েকে আর কখনও মেনে নেয়া হবে না।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদরের শ্রীনদী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মো. বাবুল আক্তার বলেন, ‘খবর পেয়ে আল আমিনের বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানে প্রথমে আল আমিনের বাবা মোহাম্মদ আলী উপস্থিত থাকলেও সেও পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে পালিয়ে যায়। এছাড়া মেয়েটি বাড়িতে হাজির হওয়ার খবরে আল আমিন সঙ্গে সঙ্গে পালিয়ে যায়। মেয়েটিকে মারধর করা হয়েছে, এমন অভিযোগে মামলা করলে তাদের গ্রেফতার করা হবে।’
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post