শরীয়তপুর সদর উপজেলায় প্রশিক্ষণ নিতে আসা এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার মামলায় আব্দুল মান্নান খাঁ (৪২) নামে এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের চর সোনামুখী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মান্নান খাঁ রুদ্রকর ইউনিয়নের মৃত হানিফ খাঁর ছেলে। তিনি রুদ্রকর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই নারীর বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। তার স্বামী একজন ওমান প্রবাসী। স্বামীর কাছে বিদেশ যাওয়ার জন্য ওই নারী কিছুদিন আগে শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের আমিন বাজার এলাকায় সরকারি ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হন। সেখানে বসে পরিচয় হয় ইদ্রিস গাজী নামে এক ব্যক্তির সাথে। এরপর গত ২৫ জুন রাত ৯টার দিকে ওই নারী মাদারীপুর থেকে শরীয়তপুর ট্রেনিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে আসছিলেন।
পথিমধ্যে ওই নারীকে বহনকারী অটোরিকশাটি থামিয়ে তার মুখ বেঁধে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় রুদ্রকর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খাঁ, ইদ্রিস গাজী, কালাচান খাঁসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জন ব্যক্তি। এ সময় ওই নারী তাদের বাধা দেয়ার চেষ্টা চালালে তার অশ্লীল ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ওই নারীর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় তারা।
পরে ওই নারী স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন। এই ঘটনায় গত ৩০ জুন যুবলীগ নেতা আব্দুল মান্নান খাঁ, ইদ্রিস গাজী, কালাচান খাঁসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার সুবাদে ইদ্রিস নামের এক ব্যক্তির সাথে আমার পরিচয় হয়। আমি যখন ট্রেনিং সেন্টারে যাচ্ছিলাম ইদ্রিস গাজীসহ বেশ কয়েকজন আমার মুখ চেপে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় এবং স্পর্শকাতর ভিডিও করে রাখে। আমাকে তারা মারধরও করেছে। আমি লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পরে তারা আমার স্পর্শকাতর ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে মোবাইল ফোনে টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ঘটনার ৫ দিন পর আদালতে মামলা করি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
শরীয়তপুর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুহুন মাদবর বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে। তিনি যদি সংশ্লিষ্ট কাজের সাথে জড়িত থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে পালং মডেল থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ওই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি। তাকে আগামীকাল আদালতে পাঠানো হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
Discussion about this post