বেনজীর আহমেদ। সাবেক আইজিপি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অর্জন করেছেন বিপুল অবৈধ সম্পদ। দেশের নানা প্রান্তে জমি, ফ্ল্যাট, প্লট, বাড়ি, গাড়ি, হোটেল, রিসোর্ট গড়ে আলোচনায় আসা বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
কমিশন ইতিমধ্যে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিপুল অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে। এই সম্পদের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুই দফা হাজির হওয়ার নোটিশ দিলেও বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা এতে সাড়া দেননি।
সর্বশেষ তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দিয়েছে দুদক। অবৈধ সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান চলার আগে দেশ ছেড়ে চলে যান সাবেক এই আইজিপি। সঙ্গে স্ত্রী-সন্তানও। তিনি কোথায় আছেন তা নিয়ে আছে ধোঁয়াশা।
তবে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, নাগরিকত্ব নিয়ে তুরস্কে অবস্থান করছেন বেনজীর আহমেদ। এ ছাড়া স্পেনেও নাগরিকত্ব নিয়ে রেখেছেন তিনি। দেশে অবৈধ সম্পদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলায় বেনজীর আহমেদের আর ফেরার সম্ভাবনা নেই।
কারণ দেশে ফিরলে তাকে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। দেশ ছাড়ার পর এখন পর্যন্ত বেনজীর আহমেদকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। দেশ ছাড়ার আগে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা বিপুল অর্থও তুলে নিয়েছেন তিনি।
একটি সূত্র মানবজমিনকে নিশ্চিত করেছেন, ড. বেনজীর আহমেদ আর দেশে ফিরবেন না। বিদেশেই তিনি পরিবার নিয়ে স্থায়ী হচ্ছেন। দেশের মতো বিদেশেও তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। বিশেষ করে দুবাইতে তার সম্পত্তি থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এখন তিনি বিদেশেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র আরও জানায়, গত ৬ই জুন এক কন্যা ও স্ত্রীকে নিয়ে প্রথমে দুবাই যান বেনজীর আহমেদ। পরে সেখানে ১০ দিন অবস্থান করে ১৭ই জুন তুরস্কে পাড়ি জমান। তুরস্কে বিনিয়োগের শর্তে নাগরিকত্ব পেয়েছে বেনজীর ও তার পরিবার।
তবে ইউরোপের আরেক দেশ স্পেনেও বিনিয়োগের শর্তে নাগরিকত্ব পেয়েছেন বেনজীর। আগামী মাসেই তিনি স্পেনে যাবেন। বেনজীর আহমেদের এক সময়ের আইনজীবী এডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হকের চেম্বারের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, তাদের সঙ্গে বেনজীর আহমেদের এখন আর যোগাযোগ নেই।
বেনজীরের একটি পারিবারিক সূত্র বলছে, তার কনিষ্ঠ কন্যা এখন যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টলে অবস্থান করছেন। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেন।
বেনজীর আহমেদের বড় মেয়ের জামাতা দুবাইতে ব্যবসা করেন। সেই ব্যবসার বিনিয়োগ ও উৎস সব কিছুই বেনজীর করে দিয়েছেন বলে তথ্য এসেছে।
গত মে মাসে একটি জাতীয় দৈনিকে বেনজীর আহমেদের ‘অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ’ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিপাকে পড়েন তিনি।
এক ভিডিও বার্তায় প্রতিবেদনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করলেও এতে খুব একটা সুবিধা হয়নি। বরং একের পর এক সম্পদের তথ্য সামনে আসায় তিনি আর জনসমক্ষে আসতে পারেননি। পরিস্থিতি ক্রমে প্রতিকূলে চলে যাওয়ায় গোপনে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন বেনজীর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post