চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রবাসীকে মারধর ও আটকে রেখে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় এক ইউপি সদস্যকেও আসামি করা হয়েছে।
রোববার (২৩ জুন) চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী প্রবাসী মোহাম্মদ ফোরকান। তিনি আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের কৈখাইন এলাকার আলী আকবরের ছেলে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- ঐ উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম চৌধুরী, একই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবদুল মালেক, বরুমছড়া এলাকার মোহাম্মদ নাছির, মোহাম্মদ মিজান, মোহাম্মদ খোকন ও মোহাম্মদ রুবেল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (২১ জুন) রাতে উপজেলার বরুমছড়া ইউনিয়নের সদর দীঘিপাড়ে বিদেশে ড্র সমিতির টাকার কথা বলে প্রবাসী মোহাম্মদ ফোরকানকে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করেন নাছিরসহ তার লোকজন।
এ সময় তারা জোরপূর্বক ১০০ টাকা মূল্যমানের ছয়টি খালি স্ট্যাম্প এবং চেয়ারম্যানের খালি প্যাডে ফোরকানের স্বাক্ষর নেন। এরপর তাকে ছেড়ে দেন।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ ফোরকান বলেন, দুবাইতে থাকাকালীন অভিযুক্ত নাছিরসহ আমরা কয়েকজন মিলে একটি ড্র সমিতি করেছিলাম। ড্র পেয়ে কিস্তির আট লাখ টাকা পরিশোধ না করে দেশে চলে আসেন নাছির।
আমি দেশে এসে পাওনা টাকার জন্য যোগাযোগ করলে শুক্রবার রাতে টাকা দেওয়ার কথা বলে আমাকে বরুমছড়া এলাকায় নিয়ে যান তিনি।
সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন মিলে বরুমছড়ার সদর দীঘিপাড় এলাকায় আমাকে আটকে রেখে মারধর করেন এবং উল্টো আমার কাছ থেকে টাকার পাওয়ার স্বীকারোক্তি নিয়ে ছয়টি খালি স্ট্যাম্প ও চেয়ারম্যানের প্যাডে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোরকানের কাছে টাকা পাবেন বলে দাবি করেন অভিযুক্ত নাছির। তিনি বলেন, দুবাইয়ে সবজি মার্কেটে আমাদের একটি মাসিক ড্র সমিতির টাকা নিয়ে দেশে চলে আসেন ফোরকান।
সেই টাকার জন্য একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে। সবশেষ বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিততে ফোরকান খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও স্বীকারোক্তি দেন।
একই কথা বলেন অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল ইসলামও। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে বিদেশে টাকা দেনা-পাওনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এটি নিয়ে উভয়ই বৈঠকে বসে।
বৈঠকে প্রবাসী ফোরকান দেনার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং জামিনদার হিসেবে ছয়টি খালি স্ট্যাম্পও দেন। জোরপূর্বক স্ট্যাম্প ও স্বাক্ষর নেয়ার ঘটনা ঘটেনি।
বাদীর আইনজীবী এম আসাদুল আলম সালেহ বলেন, প্রবাসীকে মারধর ও আটকে রেখে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post