হত্যার দায়ে ৪৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এক নারীকে। তারপর জানা গেল তিনি দোষী নন। তিনি ৪৩ বছর ধরে কারাগারে কোনো অপরাধ ছাড়াই দুর্বিষহ জীবনযাপন করেছেন।
সম্প্রতি তাকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি রাজ্যে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিনা দোষে জেল খাটা ওই নারীর নাম সান্ড্রা হেম। তাঁর বয়স এখন ৬৩। কারামুক্ত হলে তিনিই হবেন বিনা দোষে সবচেয়ে বেশি দিন কারাগারে কাটানো কোনো নারী।
১৯৮০ সালে মিসৌরির সেন্ট জোসেফে প্যাট্রিশিয়া নামের একজন গ্রন্থাগারকর্মী খুন হন। পুলিশ তদন্তে নেমে গ্রেপ্তার করেন সান্ড্রা হেমকে। সান্ড্রার বয়স তখন ২০। আদালতে তিনি নিজেই খুনের কথা স্বীকার করেছিলেন। তাঁর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীদতেই সান্ড্রাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আদালত।
এর অনেক বছর পর অন্য একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন মাইকেল হলম্যান নামে সেন্ট জোসেফের এক পুলিশ সদস্য। সেই মামলায় কারাদণ্ড হয় তাঁর। গ্রন্থাগারিক প্যাট্রিশিয়া খুনের সময় হলম্যানের বয়স ছিল ২২। তাঁর কাছে প্যাট্রিশিয়ার কানের দুল পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেই বিষয়ে অনেক জেরা করেও কোনো অভিযোগ দাঁড় করাতে পারেননি সরকারি কৌঁসুলিরা। পরে ২০১৫ সালে কারাগারেই মারা যান হলম্যান।
এরপর অনেক বছর পরে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সান্ড্রা হেমের আইনজীবীরা আদালতে ১৪৭ পাতার নথি জমা দিয়ে দাবি করেন, তাঁদের মক্কেল নির্দোষ। সেই নথি পর্যালোচনা করে এবং তিন দিনের শুনানির পরে বিচারক রায়ান হর্সম্যান গত শুক্রবার রায় দেন, সান্ড্রা নির্দোষ। ৩০ দিনের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে তাঁকে।
বিচারক বলেন, ‘ওই সময়ে তদন্ত যে একপেশে হয়েছিল, তা প্রমাণিত। হলম্যানের বিরুদ্ধে যথেষ্ট সাক্ষ্যপ্রমাণ থাকলেও তাকে অভিযুক্ত করা হয়নি। সান্ড্রার অসঙ্গতিপূর্ণ কথা শুনে পুলিশ ধরে নেয়, তিনিই দোষী।’
এতদিন পর এসে প্রমাণিত হলো, মানসিক রোগী ছিলেন সান্ড্রা। ১২ বছর বয়স থেকে বিভিন্ন মানসিক ও স্নায়বিক রোগের জন্য চিকিৎসাও চলেছে তাঁর। তাই আদালতে তিনি অসংলগ্ন কথা বলেছিলেন এবং নিজেই দোষ স্বীকার করেছিলেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post