দুই দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি পৌঁছাবেন। পরদিন ২২ জুন নয়াদিল্লির মর্যাদাপূর্ণ হায়দরাবাদ হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। এদিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে। পরদিন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ঢাকায় থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ ও ভারতের নতুন মেয়াদের সরকার গঠনের পর এটাই প্রথম দুই প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর কয়েকটি চুক্তি বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর হওয়ার কথা। তবে সেগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারত সফরে তাদের মধ্যে বৈঠক হলেও তাতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ ছিল না। তবে সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদি এ বছরের শেষে ঢাকা সফর করতে পারেন। আগামী জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরের কথা রয়েছে। তার আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন। কর্মকর্তারা জানান, এবারে দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যৌথ নদী কমিশন বৈঠক শুরু নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। মূলত গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের জন্য বৈঠক হবে। আগামী ২০২৬ সালে গঙ্গা চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। সেটাই নবায়ন করার সিদ্ধান্ত হতে পারে। এ ছাড়া তিস্তা অববাহিকায় জলাধার নির্মাণ নিয়ে কথা হবে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা গত মাসে ঢাকা সফরে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের আগ্রহ মতো ভারত তিস্তা অববাহিকায় জলাধার নির্মাণ ও নদীর পলি উত্তোলনের কাজ করতে চায়। এ বিষয়ে দুই প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন। ভারত সরকার চায় দ্রুত সুসংহত আর্থিক চুক্তি বাস্তবায়নের আলোচনা শুরু করা এবং ভারতের দেওয়া ৫০০ মিলিয়ন ডলার প্রতিরক্ষা ক্রেডিট ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। এ ছাড়া অনেক দিন না হওয়া ভারত-বাংলাদেশ যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করতে চায় ভারত। আগামী সেপ্টেম্বরে ফেনী নদীর ওপর মৈত্রী সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হবে। দুই প্রধানমন্ত্রী এই যান চলাচলের প্রতীকী উদ্বোধন করতে পারেন। তার আগে প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। সেতু উদ্বোধন হয়েছিল ২০২১ সালে। এ ছাড়া রামপাল মৈত্রী বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দ্বিতীয় ইউনিটের উদ্বোধন হতে পারে। ত্রিপুরাসহ আরও কয়েকটি নতুন সীমান্ত হাট চালু করা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। বাংলাদেশ ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনতে চায়, ভারত সরকার তাতে সম্মতি দিতে পারে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফর নিয়ে জানিয়েছেন, দ্বিপক্ষীয় সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সইয়ের কথা রয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতার কিছু ক্ষেত্রে কিছু ঘোষণাও আসতে পারে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, দুই দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো তোলা হবে। দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে তিস্তা চুক্তির তাগিদ দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। এবারও দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিস্তা চুক্তির ইস্যু উত্থাপন হবে। ঢাকা-দিল্লি উভয় পক্ষই সীমান্ত হত্যা শূন্যের ঘরে নামিয়ে আনার জন্য সম্মত হয়েছে। তবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে শুল্ক-অশুল্ক বাধা এখনো রয়ে গেছে। এগুলো তোলা হবে শীর্ষ বৈঠকে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post