অন্যের অন্যের দরজা-জানালায় তাকানো অথবা বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।ইসলামে মানুষের সম্মান ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার রয়েছে। সামাজিক ও পারিবারিক বিধিবিধানের ক্ষেত্রে ইসলামের রয়েছে উত্তম নির্দেশনা। সমাজকে স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে সামাজিক বিধি-বিধান না মানা হলে শাস্তির বিধানও রয়েছে। অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
নিজ ঘরে প্রত্যেকে স্বাচ্ছন্দ্যে নিজের মতো করে থাকতে পছন্দ করেন। ঘরে সাধারণত আরামদায়ক পোশাক পরেন। এছাড়া ঘুমানোর সময় পরিহিত পোশাকের অংশবিশেষ খোলা থাকতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ঘর-বাড়িতে হঠাৎ কেউ ঢুকে গেলে বা কারও দরজা-জানালা দিয়ে দৃষ্টি দিলে ওই ব্যক্তি অস্বস্তিতে পড়তে পারেন।
এছাড়া মাহরাম নয় এমন কোনো পুরুষ বা নারীর ওপর দৃষ্টি পড়তে পারে। এতে দৃষ্টিদানকারী কবিরা গুনাহে লিপ্ত হয়ে যাবে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ইসলাম অন্যের ঘরে প্রবেশের জন্য অনুমতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। বিনা অনুমতিতে অন্যের ঘরে প্রবেশ করা নাজায়েজ। এটি সাধারণ ভদ্রতা ও শিষ্টাচার পরিপন্থী।
মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। আর যদি তোমরা সেখানে কাউকে না পাও তাহলে তোমাদের অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত তোমরা সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি তোমাদের বলা হয়, ফিরে যাও, তাহলে ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্রতা। তোমরা যা করো আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবগত।’ (সুরা নুর, আয়াত : ২৭-২৮)
অনুমতি ছাড়া কারও ঘরের ভেতরে তাকানো এবং দরজা-জানালায় উঁকি দেয়া অমার্জনীয় অপরাধ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কারও ঘরে বিনা অনুমতিতে উঁকি দেবে, তার জন্য ওই ব্যক্তির চোখ ফুঁড়ে দেয়া বৈধ।’ (মুসলিম: ২১৫৮)
অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যদি কেউ তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ছাড়া উঁকি মারে আর তুমি পাথর মেরে তার চক্ষু ফুটো করে দাও, তাতে তোমার কোনো গুনাহ হবে না।’ (বুখারি: ৬৮৮৮)
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মুজতাহিদ ইমাম ও মুহাদ্দিসদের বক্তব্যে ভিন্নতা আছে। কিন্তু এ কথায় কারো দ্বিমত নেই যে অন্যের ঘর, দরজা ও জানালা দিয়ে উঁকি দেয়া পাপ।
নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনে এ হাদিসের ওপর আমল করতে দেখা যায়। সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক ব্যক্তি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো এক ঘরে উঁকি দেন। তখন নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একটা ‘মিদরা’ (তথা এক ধরনের চিরুনি) ছিল, যা দিয়ে তিনি তার মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন।
তখন নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে (ধমকি স্বরূপ) বলেন, যদি আমি জানতাম- তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। (বুখারি: ৬২৪১)
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post