বিয়ে হয়েছে ছোট বোনের সঙ্গে কিন্তু কাগজে-কলমে তালাক দিয়েছেন বড় বোন। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের সিন্নিরচর গ্রামের জয়নাল খানের ছেলে শাকিল হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের আবুল কালাম ফরাজীর মেয়ে আয়েশা বেগমের বিয়ে হয় ১০ মাস আগে। সংসাররের বিষয়টি শাকিল পরিবারের সবাই জানত। কিন্তু বিয়ের ১১ মাস পর একটি ডিভোর্সের সংবাদ সবাইকে অবাক করে দিয়েছে। সুখের সংসারে হঠাৎ স্ত্রীর কাছ পক্ষ থেকে তালাকনামা পেয়ে যেন মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে শাকিলের। আরও বড়সড় ধাক্কা খান যখন দেখেন তালাক তাকে স্ত্রী আয়েশা দেননি, দিয়েছেন তার বড় বোন সুরাইয়া।
আবার কাগজে-কলমে যার সঙ্গে শাকিলের বিয়ে হয়েছে, সেই সুরাইয়ার রয়েছে স্বামী ও ২ সন্তান। তাই ভুল শুধরে তাকেও ঘরে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। এদিকে, সংসার করলেও আয়েশার সঙ্গে তো বিয়েই হয়নি। এমন গোলমেলে পরিস্থিতিতে তালাকের কাগজ গ্রহণ করতে রাজি নন শাকিল।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ শাকিল বলেন, বাস্তবে আয়েশার সঙ্গে বিয়ে হয়, তবে কাবিননামায় লেখা রয়েছে আয়েশা নয়; আমার বিয়ে হয়েছে সুরাইয়ার সঙ্গে। তিনি সম্পর্কে আমরা স্ত্রীর (আয়েশার) বড় বোন। বিয়ের পর আয়েশার সঙ্গে ঘর সংসারও করি। তবে দীর্ঘদিন পর আয়েশা আমার সংসার ছেড়ে চলে গেছে। আর সুরাইয়া আমাকে তালাকনামা পাঠিয়েছেন। ওরা ইচ্ছাকৃতভাবে জালিয়াতি করেছে। পরিবারসহ আমার মানসম্মান নষ্ট হয়েছে। সেই সঙ্গে আমি আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমি এর বিচার চাই।
শাকিলের বাবা জয়নাল খান বলেন, বিয়ের সময় কাজীকে যে জন্মনিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, উনি তা দেখেই লিখেছেন, আমরা তো আর বিষয়টি খতিয়ে দেখিনি। বউ ফিরতিতে বাবার বাড়ি নেওয়ার পর আর তারা দিতে চায়নি। আমি ছেলের বউকে তাদের বাড়ি থেকে কয়েকবার আনতে গেলেও তারা দেয়নি। পরে কাবিননামা তুলে দেখি ছেলের বউয়ের নাম সুরাইয়া লেখা। আর বিয়ের সময় শুনছি বউয়ের নাম আয়েশা।
এদিকে কনের মা বিবি হাজেরা বলেন, আয়েশার বিয়ের কাবিনের কাগজ ওঠানোর পর দেখি সেখানে সুরাইয়ার নাম লেখা। এ ঝামেলা যে কাবিননামা তৈরি করেছে তার কারণে হয়েছে।
আয়েশার বড় বোন সুরাইয়া বলেন, আমার সংসারে দুই সন্তান আছে। কাবিন আয়েশার নামে করার কথা থাকলেও তা আমার নামে করা হয়েছে। কাবিন ওঠানোর পর বিষয়টি আমরা দেখতে পাই। আর এ কাজ কাজী করেছে।
এদিকে স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, বিয়ের সময় আয়েশার বয়স ১৮ না হওয়ায় বড় মেয়ে সুরাইয়ার জন্মনিবন্ধন দিয়ে ছোট মেয়ের বিয়ে পড়ানো হয়েছে। আর বিষয়টি মেয়ের পরিবার জানতো। এখন জানাজানি হওয়ায় তার নানান জনের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
এদিকে বিয়ে ও তালাকের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কাজী এ কে এম সিরাজুল ইসলাম।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবদুল কাদের ফরাজী জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তার কাছে কিংবা গ্রাম আদালতে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ জানালে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post