কোমল পানীয়র জগতে বছরের পর বছর দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করেছে কোকাকোলা ও পেপসি। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলি নিধনযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর থেকেই বয়কটের তোপে ব্যবসায় লস খাচ্ছে এই দুই প্রতিষ্ঠান।
সম্প্রতি বাংলাদেশেও কোকাকোলার একটি বিজ্ঞাপন বিতর্কের জন্ম দেয়। অনুভূতিতে আঘাত লাগায় দেশের নেটিজেনরা কোকাকোলা বয়কটের ব্যাপারে সরব হন। তবে শুধু বাংলাদেশই নয়, কোকাকোলা ও পেপসি বিশ্বের অন্য জায়গায় মার খাচ্ছে বেশ।
আর মাত্র কয়েক দিন পর মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো পালন করবে পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত এই ধর্মীয় উৎসবে কোমল পানীয়, বিশেষ করে কোকাকোলা ও পেপসির চাহিদা বেড়ে যায়।
এ উপলক্ষকে টার্গেট করে দেশের বাজারে কোকাকোলার বিজ্ঞাপন বানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপন ব্যাকফায়ার করে। এবার কোকাকোলা ও পেপসির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে আরেকটি মুসলিম দেশের নেটিজেনরা।
গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ পুরো বিশ্বে নাড়া দিয়েছে। খোদ ইসরায়েল এবং তার মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। অধিকারকর্মীরা কোকাকোলার মতো কোমল পানীয় বর্জনেরও ডাক দিচ্ছে। তার পেছনে কারণও রয়েছে।
ফিলিস্তিনের একটি এলাকা দখল করে সেখানে শিল্পাঞ্চল বানায় ইসরায়েল। সেখানে কোকাকোলার ফ্যাক্টরি রয়েছে। তাই দখলকৃত জায়গায় ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছে কোকাকোলা। যার গুড় খাচ্ছে ইসরায়েলও।
মরক্কোর সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে কোকাকোলা বয়কটের হ্যাশট্যাগ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা বলছে, কোকাকোলা পান করা, তাদের ফিলিস্তিনি ভাইবোনের রক্ত পানের সমান।
অনেকের যুক্তি হচ্ছে, মরক্কোর নিজস্ব তৈরি পুদিনার চা, কোকাকোলার চেয়ে শতগুণে ভালো। এটা একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর এবং দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো। অনেকে আবার প্রাকৃতিক জুস বা মরক্কোর তৈরি অন্য পানীয় পানেরও পরামর্শ দিচ্ছে।
কোকাকোলা ও পেপসি বয়কটের ডাক দিলেও মরক্কোর স্থানীয়দের মধ্যেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কেননা এতে করে মরক্কোয় এসব পণ্যের স্থানীয় কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মরক্কোর চাকরির বাজারের একটা বড় সংখ্যক মানুষ সফট ড্রিংক সেক্টরে কাজ করেন। যদি এসব পানীয়ের ব্যবসা কমে যায়, তাহলে চাকরি হারাতে পারেন তারা। তবে অনেকের বিশ্বাস ইসরায়েলকে অর্থনৈতিকভাবে চাপ দিতে পারলেই তারা আকাশ থেকে মাটিতে নামবে।
২০২২ সালে মার্কিন খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জেনারেল মিলস অধিকারকর্মীদের অব্যাহত আন্দোলনের মুখে দখলকৃত আটারট থেকে বেরিয়ে আসে। এখন দ্য ফ্রেন্ডস অব আল-আকসা চাইছে একই ধরনের পদক্ষেপ নিক কোকাকোলা।
তাদের যুক্তি হচ্ছে, কোকাকোলা পানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের জমি অবৈধভাবে দখলের ব্যাপারে আমরা ভোক্তা হিসেবে চোখ বন্ধ করে রাখছি।
এদিকে, বিশ্বের অনেক দেশেই ব্যবসায় মার খাচ্ছে কোকাকোলা ও পেপসি। তুরস্কেও কোকাকোলার ব্যবসা কমেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post