মেক্সিকোর পশ্চিমাঞ্চলীয় মিচোয়াকান প্রদেশের কোটিজা শহরের মেয়র ইয়োলান্দা সানচেজ ফিগুয়েরাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মেক্সিকান কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বুধবার সিএনএন জানিয়েছে, গত শনিবার দেশটিতে প্রথমবারের মতো কোনো নারী প্রেসিডেন্ট বিজয়ী হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মিচোয়াকান রাজ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ঘটনার দিন একটি জিম থেকে বাসায় ফিরছিলেন ফিগুয়েরা। এ সময় তাঁর সঙ্গে একজন দেহরক্ষীও ছিলেন।
রাস্তায় একটি সাদা ভ্যানে চড়ে আসা কয়েক ব্যক্তি তাঁদের ওপর গুলিবর্ষণ করেন। এই ঘটনায় পরে ফিগুয়েরা ও তাঁর দেহরক্ষী দুজনই হাসপাতালে মারা যান। ঘটনায় নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেক্সিকোর জাপোপান শহরে একবার অপহৃত হয়েছিলেন ফিগুয়েরা। যদিও তিন দিন পর তাঁকে ছেড়ে দিয়েছিল অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় পরে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে অপহরণের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
মিচোয়াকানের প্রাদেশিক সরকার ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ফিগুয়েরা ও তাঁর দেহরক্ষীকে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে। প্রদেশের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ীদের খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে একটি যৌথ নিরাপত্তা অভিযান চালু করা হয়েছে।
ফিগুয়েরাকে হত্যার কয়েক ঘণ্টা আগেই মেক্সিকোতে প্রথমবারের মতো একজন নারী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ক্লাউদিয়া শিনবাউম। নারী নির্যাতন ও পুরুষতান্ত্রিক মেক্সিকান সমাজে ক্লাউদিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়াকে একটি বিশেষ অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
তবে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মেক্সিকোতে নজিরবিহীন সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। মেক্সিকোর ইতিহাসে সবচেয়ে রক্তাক্ত নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবারের নির্বাচনকে। ভোটকে প্রভাবিত করার জন্য দেশটির সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো নির্বাচনী প্রচারণার সময় কয়েক ডজন রজনীতিবিদকে হত্যা করেছে।
আগামী ১ অক্টোবর থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন শুরু করবেন ক্লাউদিয়া। বিদায় নেবেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ। তাঁরা দুজনই মোরেনা দলের এবং মিত্র হিসেবে পরিচিত।
লোপেজের সামাজিক কল্যাণমূলক নানা কর্মসূচি অনেক মেক্সিকানকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে। এর ফলে মোরেনা দলের জনপ্রিয়তা আরও অনেক বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে এই জনপ্রিয়তার প্রতিফলন দেখা গেছে।
নতুন প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া দেশের মধ্যে গ্যাং নেতৃত্বাধীন সহিংসতা এবং গুমের মহামারিকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। মেক্সিকোতে হত্যার হার বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ এবং এই দেশটি নারীদের জন্য একটি বিপজ্জনক স্থান হিসাবে রয়ে গেছে।
এদিকে, দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ জন নারী হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। পাশাপাশি বর্তমানে মেক্সিকোতে ১ লাখের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁরা কোথায় আছেন, কেমন আছেন কেউ জানে না।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post