গত ৩১ মে’র মধ্যে যে সব কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তাদের জন্য সময় বাড়ানোর আর কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার হাজনাহ মোহাম্মদ হাশিম।
অন্যদিকে, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলছেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
বুধবার (৫ জুন) প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর দফতরে প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন মালয়েশিয়ান হাইকমিশনার।
তিনি বলেন, গত ৩১ মে’র মধ্যে অনেক বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি। তাদের যাওয়ার আর কোন সুযোগ নেই।
তবে যে সব কর্মী মালয়েশিয়া যাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের পাঠাতে সরকার আরও চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে সময় বাড়ানো হবে না জানিয়ে দিলেও, বঞ্চিত কর্মীদের সুযোগ দেয়ার জন্য আবারও চিঠি দেয়া হবে মালয়েশিয়া সরকারকে।
রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের সংগঠন বায়রা জানিয়েছে, মাত্র পাঁচ থেকে ছয় হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি। তবে এটা মানতে নারাজ প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ হিসাব বায়রার নিজস্ব।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, গত শুক্রবার (৩১ মে) পর্যন্ত দেশটিতে ৫ লাখ ২৬ হাজার ৬৭৬ জন বাংলাদেশি কর্মীকে পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ছাড়পত্র দেয় প্রায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬৪২ জনকে। অজ্ঞাত কারণে বাদ দেয়া হয় ৩২ হাজার কর্মীকে।
কথা ছিল, জনপ্রতি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা করে দেবেন কর্মীরা। এ খরচের ভেতর আছে: পাসপোর্ট খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিবন্ধন ফি, কল্যাণ ফি, বিমাকরণ, স্মার্ট কার্ড ফি ও সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ। আর ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়াসহ ১৫টি খাতের খরচ বহন করবে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।
এ অবস্থায় তালিকাভুক্ত ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪২ জনের কাছ থেকে সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়ার আমিন নুর ও দেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হাতিয়ে নেয় নির্ধারিত ফি বাদে গড়ে পৌনে ৫ লাখ টাকা করে, যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে, যে সব কর্মী নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তাদের তথ্য চেয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি।
এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মন্ত্রণালয়ের নিয়োগানুমতি এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) স্মার্ট কার্ড পাওয়ার পরও অনেক রিক্রুটিং এজেন্সি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (৩১মে) মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর কারণ চিহ্নিত করতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মোহাম্মদ মাহবুবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
যে সব কর্মী নির্ধারিত সময়ে মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, তারা আগামী ৮ জুনের মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য (নাম, পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, রিক্রুটিং এজেন্সির নাম, পাসপোর্ট নম্বর, বিএমইটির স্মার্ট কার্ডের কপি এবং অভিযোগের স্বপক্ষে প্রমাণপত্র) দিয়ে ই-মেইলের ([email protected]) মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করতে পারবেন।
এছাড়া, অভিযোগকারীরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ার (মোবাইল: ০১৯২৪২৭৭০৮৩) বা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর উপ-পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন সরকারকে (মোবাইল: ০১৭১৫২২৮৩০৭) ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। পাশাপাশি তাদের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরেও অভিযোগ ও প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে পারবেন।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে উল্লেখিত ই-মেইলের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযোগ দাখিলের জন্য যারা মালয়েশিয়া যেতে চান, তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post