কুষ্টিয়ায় বহুল আলোচিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা বিপ্লবী বাঘা যতীন এর ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তাদের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীর আরাফাত আজ শনিবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আনিসুর রহমান আনিস (৩৫), সবুজ হোসেন (২০) ও হৃদয় আহমেদ (২০)। কলেজ পরিচালনা পর্ষদ ও কলেজের অধ্যক্ষের সাথে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের ধরে ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। গ্রেফতার আনিসুর রহমান কুমারখালী উপজেলার আনিসুর কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
আরো পড়ুনঃ ইতালির নতুন ভিসা প্রত্যাশীদের দুয়ার খুললো
এ ঘটনায় বাচ্চু নামে আরো একজন জড়িত আছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাত। এসপি তানভীর আরাফাত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আনিসুরের সঙ্গে কয়া মহাবিদ্যালয় (কলেজ) কর্তৃপক্ষের আগে থেকেই দ্বন্দ্ব আছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সহযোগীদের নিয়ে তিনি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সড়কের পাশে স্থাপিত বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করেন।
এ ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে ধর্মীয় কোনও সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত আক্রোশেই এটি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার মাধ্যমে হীন উদ্দেশ্য সাধনের ষড়যন্ত্র ছিল কি না তা তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে দেখা হবে।
আরো পড়ুনঃ বৈধভাবে কানাডা যাবেন যেভাবে
বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানসহ কয়া মহাবিদ্যালয়ের সভাপতি নিজামুল হক, অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ, নৈশপ্রহরী খলিলুর রহমানকে থানায় নেওয়া হয়। সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীদের সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এদিকে ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমারখালী উপজেলার কয়া গ্রামে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে কয়া কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।
আরো পড়ুনঃ পরকীয়া করে হাতেনাতে ধরা খেলো ওমান প্রবাসীর স্ত্রী
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন বাঘা যতীন। কয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি একাই বাঘের সঙ্গে লড়াই করে বাঘ হত্যা করেছিলেন বলে বাঘা যতীন নামে পরিচিত পেয়েছিলেন। বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের প্রধান নেতা।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঠিক আগে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি জার্মানি থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রতিশ্রুতি অর্জন করেছিলেন। তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে গ্রামের কলেজের সামনে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর তৎকালীন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আবদুস সামাদ ভাস্কর্যের উদ্বোধন করেছিলেন।
https://www.youtube.com/watch?v=4shsrth0Whg
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post