যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের বাফেলোতে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় চারদিন আগে বন্দুকধারী গ্রেপ্তার হলেও এখনও হামলার আশঙ্কা কাটছে না বাফেলোর প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য প্রবাসীরা দাবি জানালেও তা বাস্তবায়ন করেননি পুলিশ বিভাগ। ফলে আতঙ্কিত অবস্থায় দিনযাপন করছেন হাজারো বাংলাদেশি।
জানা গেছে, গত ১০ বছরে নিউ ইয়র্ক সিটিসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক বাংলাদেশি বাফেলোতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছেন।
এখানে কম মূল্যের বাড়ি কিনে মেরামতের পর সেসব বাড়ি ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছেন অনেকদিন ধরে। বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যার ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি।
গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত আবু সালেহ মোহাম্মদ ইউসুফ (৫৩) ও বাবুল মিয়া (৫৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কমিউনিটিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই রাতে ঘুমাতে পারছেন না। সব সময় একটা ভয় কাজ করছে।
তিনি বলেন, এখানকার বাংলাদেশিদের বাড়িগুলোতে অধিকাংশ ভাড়াটে কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের মানুষ মাসের পর মাস ভাড়া না দিয়ে মালিকদের নানা হুমকি প্রদর্শন করে থাকেন। আমারা সব কিছু সহ্য করে দিন কাটাচ্ছি।
ভাড়া আদায়ের জন্য পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাওয়া যায় না। এসব নিয়ে কঠিন সময় পার করছে বাফেলোর প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাফেলোতে প্রচুর সংখ্যক বাংলাদেশি বসবাস করলেও এখানে নেই কোনো ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি। সবাই নেতা হতেই ব্যস্ত। কোনো অনুষ্ঠান হলে বক্তৃতা দেওয়া নিয়েই সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
তাই একটি ঐক্যবদ্ধ কমিউনিটি গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের আহ্বান জানান তিনি।
গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবু সালেহ মোহাম্মদ ইউসুফ (৫৩) ও কুমিল্লার বাবুল মিয়া (৫৮)। বাবুল মিয়া আগে সপরিবারে থাকতেন ম্যারিল্যান্ডে।
সম্প্রতি তিনি বাফেলোতে বাড়ি কেনেন। আর ইউসুফ গত ডিসেম্বরে স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ বাফেলোতে আসেন স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য।
গত রবিবার (২৮ এপ্রিল) ডেল ও’ কামিংস নামে ৩১ বছর বয়সী বন্দুকধারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাফেলো সিটি মেয়র বাইরেন ডাব্লিউ ব্রাউন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাফেলোর আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় তারা বদ্ধপরিকর। পুলিশ কমিশনার জোসেফ গ্রেমাগলিয়া জানান, আগের চেয়ে সেখানে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি জে কিন বলেন, ডেল কামিংসের বিরুদ্ধে বাফেলো ক্রিমিনাল কোর্টে বেশ কয়েকটি মামলা বিচারাধীন। তিনি গৃহহীন।
তার নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা না থাকায় মামলাগুলোর একটিতেও হাজিরা দেননি। হত্যাকাণ্ডের প্রায় একই সময়ে ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসিটিভি ভিডিওতে তাকে দেখা গেছে।
ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি বলেন, অস্ত্রটি বেআইনিভাবে তার দখলে ছিল। দুই বাংলাদেশিকে হত্যায় সেটি ব্যবহার করা হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
বেআইনি অস্ত্র বহনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ডেল কামিংসের সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে জানিয়ে জে কিন বলেন, আর জোড়া খুনের ঘটনার দোষী সাব্যস্ত হলে আজীবন তাকে কারাগারে থাকতে হতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post