বিশ্বের এমন একটি দেশ যেখানে কোনো গরিব মানুষ নেই। সবাই কোটিপতি। কোটি কোটি টাকার সম্পদ আছে যাদের। তবে আয়তনের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে দেশটি।
আয়তনের দিক থেকে ভ্যাটিকন সিটির পরে মোনাকো বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ। কিন্তু মাথা পিছু জিডিপির দিক থেকে বিশ্বে এর কোনো মিল নেই। এদেশের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন কোটিপতি।
মাত্র ২.০৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশটির জনসংখ্যা ৩৯ হাজার ৫০ জন। এই দেশের সরকারি ভাষা ফরাসি। তাই এখানকার মুদ্রা ইউরো।
আমেরিকা বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি হলেও মাথাপিছু জিডিপির দিক থেকে এটি বিশ্বের থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই ক্ষেত্রে একটি দেশ এক নম্বরে রয়েছে যা মানচিত্রে খুঁজে পাওয়া সহজ নয়।
বলছিলাম ইউরোপের দেশ মোনাকোর কথা। ভূমধ্যসাগরে ইতালি ও ফ্রান্সের মধ্যে অবস্থিত এই দেশটি আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষু্দ্রতম দেশ। এদেশের জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশই কোটিপতি।
অর্থাৎ তিন জনের প্রত্যেকের নেট মূল্য ১০ লাখ ডলারের বেশি অর্থাৎ ১০ কোটি ৯৩ লাখ ১১ হাজার ৪০০ টাকা। এই দেশের মাথাপিছু জিডিপিও বিশ্বের সর্বোচ্চ। এখানকার প্রতিটি মানুষের মাথাপিছু আয় ২ কোটি টাকা।
ভ্যাটিকান সিটির পরে মোনাকো বিশ্বের দ্বিতীয় ক্ষুদ্রতম দেশ। এদেশের অর্থনীতি পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। এছাড়াও এটি তার ব্যাংকিং শিল্পের জন্যও বিখ্যাত। মজার ব্যাপার হলো এদেশে কোনো আয়কর নেই।
এছাড়া ব্যক্তি ও কোম্পানির উপর অন্যান্য করও বেশ কম। আর এই কারণেই মোনাকো ধনী ব্যক্তিদের প্রিয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
ছোট দেশটি আর্থিক এবং বীমা কোম্পানিতে পরিপূর্ণ এবং তারা দেশের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য় অবদান রাখে। মোনাকোর জিডিপির ১০ শতাংশ পাইকারি বাণিজ্য, নির্মাণ খাত ৯.১ শতাংশ এবং রিয়েল এস্টেট কর্যক্রম ৭.৮ শতাংশ। মোনাকোতে রিয়েল এস্টেটের দাম সবচেয়ে বেশি। বাড়ি কিনতেই এখানে সবচেয়ে বেশি খরচ করতে হয়।
মোনাকোর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো এর ক্যাসিনো সংস্কৃতি। এটি উপভোগ করতে সারাবিশ্ব থেকে মানুষ আসেন। দেশের বিখ্যাত মন্টে কার্লো ক্যাসিনো রয়েছে এই দেশে। এটি ১৮৬৫ সালে শুরু হয়েছিল। মোনাকোর সরকারি ভাষা ফরাসি।
বিশ্বের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের আবাসস্থলও মোনাকো। এর মধ্যে রয়েছে ফর্মুলা ওয়ান রেসার লুই হ্যামিল্টন, টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচ এবং ব্রিটিশ রিটেইল টাইকুন স্যার ফিলিপ গ্রিন। এখানে অনেক হলিউড ছবির শুটিং হয়েছে।
দেশের প্রধান প্রিন্স আলবার্ট। পর্যটন শিল্প দেশটির প্রধান চালিকা শক্তি। এর প্রধান আকর্ষণ কাসিনো বা জুয়াখেলার আখড়াগুলো। দেশের জনগনকে কোনো আয়কর দিতে হয়না।
সরকারিভাবে রাজধানী না থাকলেও সবচেয়ে বিত্তশালী চতুর্থাংশ মণ্টি কার্লোকে মোনাকোর কেন্দ্র বলা হয়। জুয়াখেলার অঙ্কের যে তত্ত্ব প্রযোজ্য সেই প্রোবাবিলটি বা সম্ভাবনা তত্ত্বের এক বিখ্যাত পদ্ধতির নাম মণ্টি কার্লো মেথড। সেই নামেই এর কেন্দ্রের নামকরণ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post