পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার সীমান্তে অবস্থিত কালিনিনগ্রাদে রয়েছে রুশ নৌবাহিনীর শক্ত বিমান ঘাঁটি। বাল্টিক সাগরের এই অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় প্রায়শই উড়োজাহাজ বা হেলিকপ্টারের ‘গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম’ (জিপিএস) বা অন্য বৈদ্যুতিক সিগন্যাল কাজ করে না।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ব্যাহত করছে ‘টোবোল’ নামের একটি অস্ত্র। রাশিয়া এই অস্ত্র গোপনে ব্যবহার করছে বাল্টিক সাগরের উপর।
তাই সাগরে রুশ সীমানার মধ্যে কোনও উড়োজাহাজ চলে এলেই তার জিপিএস বা অন্য বৈদ্যুতিক সিগন্যাল কাজ করা বন্ধ করে দিচ্ছে। উড়োজাহাজের স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেমেই মূলত আঘাত হানে ‘টোবোল’। যার ফলে আকাশে ওই উড়োজাহাজের পথভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যম ‘দ্য সান’ একটি ‘স্যাটেলাইট ডিশে’র ছবি প্রকাশ করে। ওই স্যাটেলাইট ডিশটি কালিনিনগ্রাদে অবস্থিত রুশ ঘাঁটিতে আছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই স্যাটেলাইট ডিশটিই হল ‘টোবোল’। রাশিয়া এই অস্ত্র ব্যবহার করেই নাকি উড়োজাহাজের বৈদ্যুতিক সিস্টেমের ওপর হামলা চালাচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া য়ায়নি।
দ্য সান তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে, রাশিয়া জুড়ে এমন ১০টি ‘টোবোল’ রয়েছে। ভ্লামিদির পুতিন সরকার এই অস্ত্র দিয়ে উড়োজাহাজের বৈদ্যুতিক সিগন্যালকে সাময়িকভাবে অকেজো করছে। ন্যাটোর ক্ষেপণাস্ত্রের হাত থেকে রাশিয়ান ঘাঁটিগুলোকে রক্ষা করতেই পুতিন সরকার ‘টোবোল’ ব্যবহার করছে বলে দাবি করা হয়েছে প্রতিবেদনে। শত্রুপক্ষ যদি আকাশপথে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা করে, তবে তা রুখে দেওয়া সম্ভব হবে এই অস্ত্রের মাধ্যমে।
আমেরিকার গোয়েন্দা তথ্য মতে, ইউক্রেনে স্টারলিঙ্ক ট্রান্সমিশনে ব্যাঘাত ঘটাতেই রাশিয়া টোবোলকে কাজে লাগাচ্ছে।ইউক্রেনের যোগাযোগের যাবতীয় কাজ পরিচালিত হয় স্টারলিঙ্কের মতো স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। ‘
টোবোল’ সেই সব নেটওয়ার্কের ওপর হামলা চালায়। এছাড়া সমস্ত আধুনিক উড়োজাহাজ জিপিএস এবং গ্যালিলিওর মতো স্যাটেলাইট সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। উড়োজাহাজের যোগাযোগ ব্যবস্থা এই সব স্যাটেলাইট সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। মাঝ আকাশে চালককে সঠিক পথ দেখাতে কাজ করে এই ব্যবস্থা।
পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, ২০২২ সালের রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিনল্যান্ড থেকে কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত জিপিএস বা বৈদ্যুতিক সিগন্যাল অকার্যকর করার চেষ্টা করছে রাশিয়া।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post