সীমান্তের ওপারে মেলা দেখতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ বাংলাদেশি নাগরিক কারাভোগ শেষে দেশে ফিরছেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে আখাউড়া সীমান্ত চেকপোস্ট দিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তারা দেশে ফেরেন।
একই সঙ্গে চিকিৎসা শেষে ফেরার পথে গ্রেপ্তার হওয়া আরও তিনজন দেশে প্রবেশ করেছেন। ভারতের আগরতলাস্থ বাংলাদেশ হাই-কমিশনের মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দেশে ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন- চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কদলপুর গ্রামের দুলাল নাথের ছেলে রুবেল কুমার নাথ, উত্তর গুজরা গ্রামের মিলন বিশ্বাসের ছেলে রাজিব বিশ্বাস, সুলতানপুর গ্রামের মিলন দে এর ছেলে শঙ্কর দে, একই গ্রামের বিষু দাসের ছেলে জয় দাস, কাজল দাসের ছেলে সঞ্জয় দাস, অনিল দাসের ছেলে উল্লাস দাস, সুকুমার চৌধুরী দাসের ছেলে দীপক দাস গুপ্তা, মন্টু রাম ঘোষের ছেলে রুমন ঘোষ, যোগেস ঘোষের ছেলে রুবেল ঘোষ, রনধীর দাসের ছেলে প্রান্ত দাস। তার মেলায় ঘুরতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন।
এছাড়া একই জেলার হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম দেওয়ান নগরের মো. হোসেনের মেয়ে নাহিদা শেখ এবং তার দুই শিশুসন্তান ফয়েজ ইসলাম শেখ ও ফাইজা শেখ। তারা অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইয়ে চিকিৎসার জন্য যান।
দীপক দাস গুপ্তা বলেন, ‘আমরা ১০ জন খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতে ডংরু মেলায় ঘুরতে যাই। সেখান থেকে আগরতলায় একটি মন্দিরে যাই। ফেরার পথে আমাদের ভারতীয় গাড়িচালক নির্দিষ্ট গন্তব্যের পরিবর্তে স্থানীয় একটি থানায় নিয়ে যান। এরপর পুলিশ আমাদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করে।
আদালত আমাদের অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে এক মাসের সাজা দেন। কারাভোগ শেষে আমরা একটি হোমে ছিলাম। সেখান থেকে ৪ মাস পর বাংলাদেশ হাই-কমিশনের মাধ্যমে আজ আমরা দেশে ফিরলাম।’
দেশে ফেরত আসা নাহিদা শেখ বলেন, ‘স্বামীর চিকিৎসার তিন বছর আগে এক সন্তানসহ আমি অবৈধ পথে ভারতের মুম্বাইয়ে যাই। চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পথে ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়ে ১ বছর কারাভোগ শেষে যখন হোমে ছিলাম।
সেখানে আমার আরেকটি সন্তান হয়। ৬ মাস আগে আমার স্বামী মারা গেলে সেখানেই দাফন করা হয়। দীর্ঘ ৩ বছর পর আমি ২ সন্তানসহ আজ দেশে ফিরেছি।’
আগরতলাস্থ বাংলাদেশ হাই-কমিশনের কর্মকর্তা ওমর শরীফ বলেন, ১৩ বাংলাদেশি দেশে ফেরার পথে ভারতীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে সাজাভোগ করেন।
বিষয়টি বাংলাদেশ হাই-কমিশন জানতে পেরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে কাগজপত্র যাচাই-বাচাই শেষে তাদের আজকে দেশে ফেরত পাঠানো হলো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রাহাতুল ইসলাম, বিএসএফ এর ১২০ কোম্পানি কমান্ডার বিবেক ধীমান, আখাউড়া চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম, ৬০ বিজিবি আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার শাহ আলম প্রমুখ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post