পাকিস্তানে গত কয়েক দিনে ভারি বর্ষণ ও বজ্রপাতে অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেকের বেশি মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে।গত শুক্রবার থেকে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৭ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) ভূমিধস ও বন্যার সতকর্তা জারি করেছে।গম কাটার সময় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বৃষ্টির কারণে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশে কয়েক ডজন বাড়ি ধসে পড়েছে।লাখ লাখ মানুষ ঝড়ের হুমকিতে থাকায় ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) জরুরি পরিষেবাগুলোকে সতর্কতা জারি করেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঞ্জাবে সাত শিশুসহ অন্তত ২১ জন ও আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে আরও ২১ জন নিহত হয়েছে।রাজধানী ইসলামাবাদেও বৃষ্টিপাত হয়েছে ও দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশে সাতজন নিহত হয়েছে।
উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ার এবং বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে প্রদেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলেছি…। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করতে বলেছি তাদের।’’
গ্রামাঞ্চলের যেসব মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন, তারা বজ্রপাতের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
এদিকে বৃষ্টিতে অন্তত ২৫টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে বন্যা। ঈদুল ফিতরের ছুটির পর স্কুল খোলার কথা থাকলেও ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশের স্কুল মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আফগানিস্তানে হতাহত অনেকেই
দেশটির দুর্যোগ সংস্থা মঙ্গলবার জানিয়েছে, আফগানিস্তানেও গত চার দিনের ভারি বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। বন্যায় আরও ৩৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
বিশ্বের অন্যতম জনবহুল ভৌগোলিক অঞ্চল দক্ষিণ এশিয়ায় জুলাই-সেপ্টেম্বর বর্ষা মৌসুমের বাইরে ভারি বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ও বন্যা অস্বাভাবিক।
বিশ্বের কার্বন নির্গমনের এক শতাংশেরও কম জন্য দায়ী পাকিস্তান। তবে এটি শীর্ষ ১০টি জলবায়ু-সংবেদনশীল দেশের মধ্যে রয়েছে।২০২২ সালে বিধ্বংসী বন্যা ও রোগে পাকিস্তানে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশন গ্রুপের বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ‘‘এমন আবহাওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তন সব চেয়ে বড় ভূমিকা রাখছে। আর এই কারণে ভারি বৃষ্টিপাতকে দুই গুণ বেশি তীব্র করে তুলেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post