রক্ষক যখন ভক্ষক- কথাটি হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের বেলায় অনেকাংশে সত্য। সুন্দর ও নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করা যাদের দায়িত্ব তারাই যাত্রী হয়রানির নায়কের ভূমিকা পালন করছেন।
অসংখ্য অভিযোগ, মন্ত্রীপর্যায়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ, সিভিল এভিয়েশনের কড়া তদারকি, প্রশাসনিক নজরদারিসহ গোয়েন্দা বিভাগগুলোর নানামুখী তৎপরতার পরও বন্ধ হচ্ছে না হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি।
বিমানবন্দরে প্রবেশপথের মোড় থেকেই শুরু হয় হয়রানি। এরপর কনকর্স হল, মূল ভবন, ইমিগ্রেশন পুলিশ, কাস্টমস পোস্টসহ ঘাটে ঘাটে চলে হয়রানির মহোৎসব।
সম্প্রতি দুবাইগামী ভিজিট ভিসার যাত্রীদের বাংলাদেশের ইমিগ্রেশনে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসীরা। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে আমিরাতের বেশ কয়েকটি বাংলাদেশী সংগঠন আমিরাতের বাংলাদেশ দূতাবাস ও কনস্যুলেটে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এই হয়রানী বন্ধ না হলে ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলাদেশ।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রম বাজার ওমান
কর্তৃপক্ষের কাছে ভিজিট ভিসায় আগত যাত্রীদের আত্মীয়স্বজন বা নিয়োগকর্তার দেয়া অঙ্গীকারনামা দেয়া সত্ত্বেও কেনো এই হয়রানি তা এখন বড় প্রশ্ন প্রবাসীদের কাছে। দুবাই বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি ইয়াকুব সৈনিক বলেন, ‘কিছু অসাধু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বর্তমানে এয়ারপোর্টে আমাদের প্রবাসীদেরকে হয়রানি করছেন।’
প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের স্বার্থে এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে এ সমস্যার সমাধান করতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আজমান বাংলাদেশ বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন।
আরো পড়ুনঃ রাষ্ট্রদূতদের একহাত নিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য আমিরাতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের দাবি বর্তমানে আমিরাতে বাংলাদেশিদের গড়া প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন কোম্পানিতে লক্ষাধিক জনবলের চাহিদা রয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমিক ভিসা খুলে দেয়ায়, সুযোগটি কাজে লাগাতে চায় প্রবাসী ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট বিমানবন্দরের বহির্গমন বিভাগের কর্মকর্তাদের বৈরী আচরণ বাংলাদেশিদের জন্য এই সুযোগটি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি প্রবাসী বিনিয়োগকারীরাও বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে বলে আশংকা ব্যবসায়ীদের।
আরো পড়ুনঃ প্রাকৃতিক সুন্দরের অপরূপ লীলাভূমি ওমান
এ ব্যাপারে দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ইকবাল হোসেন খান বলেন, ভিজিট ভিসায় আসা ব্যক্তিদের জন্য এখানে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য দূতাবাসও কনস্যুলেট ইতিমধ্যে কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
পাশাপাশি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে ভিজিটে আসা ব্যক্তিদের এবং তাদের আত্মীয়-স্বজন বা নিয়োগকর্তার ডাটাবেজ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি ভিজিট ভিসা নিয়ে জটিলতা নিরসনে নিবিড় ভাবে কাজ করছেন বলে উল্লেখ করেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post