পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী রয়েছে নানা অনুষ্ঠান আর রীতি-রেওয়াজ। পবিত্র রমজানে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে প্রতিদিন কামান দাগিয়ে ইফতারের সময় জানিয়ে দেওয়ার রেওয়াজ বেশ পুরোনো, কুয়েতও এর ব্যতিক্রম নয়।
বাংলাদেশে ইফতারের সময় হলেই দেখা যায় বিভিন্ন মসজিদে সাইরেন কিংবা ‘ইফতারের সময় হয়েছে, আপনারা ইফতার করে নিন’বলে সংকেত দেওয়া হয়। অন্যদিকে কুয়েতে ইফতারের সময় জানাতে কামানের গোলা ছোড়ার আওয়াজ শোনানো হয়। যা ‘মিডফা আল ইফতার’ নামে পরিচিত।
রোজাদারদের জানাতে দেশটির শাসক শেখ মোবারক আল সাবাহ এ রীতি চালু করেন বলে জানা যায়। এটি কুয়েতের ঐতিহ্যও বটে। ইফতারের সময় হলেই দেশটির বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করে থাকে। যেটা দেখে রোজাদাররা ইফতার শুরু করেন। কুয়েত ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশে এ রীতি-রেওয়াজ চালু আছে।
এদিকে জানা যায়, কুয়েত সিটির লিবারেশন টাওয়ারের পাশেই নায়েফ প্রাসাদে এ কামান বসানো হয়েছে। নায়েফ প্রাসাদটি ১৯১৯ সালে শেখ সালেম আল-মুবারক আল-সাবাহ-এর শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল। কুয়েতে প্রথম কামানটি ১৯০৭ সালে শেখ মুবারক আল-সাবাহ-এর শাসনাধীনে আসে।
কামানটি ইরানের গভর্নরের কাছ থেকে পাওয়া একটি উপহার ছিল। নায়েফ প্রাসাদের বর্তমান কামানটি ১৯৯২ সালে বাহরাইন রাজা থেকে প্রতিশ্রুতি হিসেবে এসেছে। এই কামান দাগাতে তিনজন ইউনিফর্মধারী গার্ড দরকার হয়।
দেশটিতে কামানের গোলা ছোড়ার এ দৃশ্য দেখতে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় নাগরিক ও প্রবাসীরা তাদের কাছে এটি মনোমুগ্ধকরও বটে।
এর আগে বলা হয়ে থাকে, মিশরের তৎকালীন শাসক খোস কাদাম একদিন সূর্যাস্তের সময় নতুন একটি কামান পরীক্ষা করতে গিয়ে ঘটনাক্রমে বিস্ফোরণ ঘটে কামানটিতে, সেই সময়টা ছিল রমজানের মাগরিবের সময়।
গোটা কায়রোয় শব্দটি শোনা গিয়েছিল। স্থানীয়রা মনে করেছিল, ইফতারের সময় হয়েছে, তা জানাতে এটি নতুন শাসকের নতুন পদ্ধতি।
এরপর বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সমাজের অভিজাত ব্যক্তিরা সুলতানের কাছে গিয়ে তার সদয় অঙ্গভঙ্গির জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান। তখন থেকে এ ঐতিহ্য আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post