ভাগ্য পরিবর্তন ও পরিবারের হাল ধরতে ২২ বছর বয়সে ওমানে পাড়ি দেন আনোয়ার হোসেন। পরিবারে বাবা-মা আর তিন ভাইয়ের সংসারে সবার বড় সন্তান আনোয়ার হোসেন। ওমানেই কাজের ফাঁকে ইউটিউবে কুল চাষ দেখে আগ্রহ হয় তার। যেই আগ্রহ সেই কাজ চাচা কবির মিয়াকে সাথে নিয়ে ৩ একর জায়গায় শুরু করেন কুল চাষ। অবশেষে বাজিমাত কুলের বাম্পার ফলনে প্রবাসী আনোয়ারের চোখে-মুখে হাসি ফুটেছে।
প্রবাসী আনোয়ার হোসেন নোয়াখালী সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের আক্কাছ মিয়া বাড়ির নুর আলমের বড় ছেলে। তিনি ওমানে আছেন ১২ বছর।
এদিকে আনোয়ারের কুল বাগান ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গাছে ভারত সুন্দরী কুল ও বল সুন্দরী কুল থোকায় থোকায় ঝুলছে। কুলের ভারে গাছের ডালগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। রংটাও ঠিক যেন আপেলের মতো সবুজ ও হালকা হলুদের ওপর লাল। কুলের পাশাপাশি বাগানে আখ চাষও করেন।
দীর্ঘদিন ধরে আনোয়ার প্রবাসে থাকলেও কৃষি কাজের প্রতি একটু বেশিই আকর্ষণ ছিল। ২০২২ সালের জুন মাসে সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নে প্রায় তিন একর পতিত জমিতে ভারত সুন্দরী কুল ও বল সুন্দরী কুলের প্রায় ৮০০ চারা রোপণ করেন আনোয়ার। প্রথম বছর থেকেই খরচ বাদ দিয়ে লাভের মুখ দেখেন। এ বছরই বাগানের কুল দুই লাখ টাকার বেশি বিক্রি করেছেন আনোয়ার। বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা কুল বাগানে এসে ১০০ টাকা কেজিতে নিয়ে যান। এ বছর আট থেকে ১০ লাখ টাকা কুল বিক্রির সম্ভাবনা আছে।
এদিকে ওমান প্রবাসী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি ওমান থাকি ১২ বছর ধরে। বাগানের ফল তোলার সময় দেশে আসি, আবার চলে যাই। আমার কুল চাষের আগ্রহ তৈরি হয় সোশ্যাল মিডিয়া ইউটিউব ও ফেসবুক দেখে। আমি ওমানে যেখানে থাকি সেখানে উত্তরবঙ্গের অনেক মানুষ আছে। তাদের পরিবারের অনেকেই কুল চাষ করে থাকেন। আমি তাদের থেকেও ধারণা নিয়েছি। তারপর দেশে এসে উত্তরবঙ্গে গিয়ে কুল চাষের পদ্ধতি দেখতে যাই। তারপর ২৮০ শতাংশ পতিত জমিতে কুল চাষ শুরু করি। এ বছর আশা করছি ৮-১০ লাখ টাকার কুল বিক্রির।
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, আমাদের নোয়াখালীতে ঘরে ঘরে প্রবাসী। আমরা দেশে কিছু না করে সবাই বাইরে চলে যাই। উত্তরবঙ্গের প্রতিটি বাড়িতে হয়ত একজন প্রবাসী আছেন। তারাও দেশে কিছু করার স্বপ্ন দেখে। আমিও দেশে কিছু করতে চাই এই জন্য প্রবাসী হয়েও উদ্যোগ নিয়েছি কিছু করার। সারা জীবন প্রবাস করা যাবে না আর প্রবাসের টাকা দেশে পাওয়া গেলে সেটাই ভালো। আলহামদুলিল্লাহ আমি কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে ভালো আছি। আমার কুলগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। এগুলো বেপারীরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আমার এই সফলতা দেখে কুল বাগান করতে অনেকেই উৎসাহিত হয়ে পরামর্শ নিতে আসছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post