পবিত্র মক্কার ‘মসজিদুল হারামের’ চত্বরে ঘুরে বেড়ায় একঝাঁক কবুতর। হজ ও ওমরা পালনে আসা মানুষকে স্বাগত জানায় এসব কবুতর। মসজিদুল হারামগামী মুসল্লিদের সঙ্গে এদের রয়েছে বেশ সখ্যতা। কবুতরগুলো মানুষ দেখে ভয় পায় না। শিশুরাও এসব কবুতরের সঙ্গে খেলায় মেতে উঠে। মুসল্লিরা তাদের গমের দানা ছিটিয়ে দেন। এই কবুতর ও পবিত্র নগরীতে আসা মানুষের মধ্যে এই সুসম্পর্ক চলে আসছে শত শত বছর ধরে।
কবুতরগুলো নানা নামে পরিচিত। কেউ এদের সম্মানিত স্থানের কবুতর বলে থাকেন। আবার কেউ বলেন সংরক্ষিত কবুতর। কবুতরগুলো সম্মানিত এ স্থানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে এবং তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা। কারণ হারাম এলাকায় সব ধরনের পশু-পাখি হত্যা করা নিষিদ্ধ। আল্লাহ প্রদত্ত নিরাপত্তা উপভোগ করে কবুতরগুলো সর্বত্র বিচরণ করে। অনেকে এদের শান্তির পায়রাও বলে থাকেন।
মক্কার ইতিহাস গবেষক সামির আহমেদ বারকাহ বলেন, গ্র্যান্ড মসজিদের ভেতরে নিরাপদ জায়গাটির ভেতর এসব পাখিরা ঘুরে বেড়ায়। সংরক্ষিত পাখি বলার কারণ মক্কায় এরা নিরাপদে, নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারে। পৃথিবীর অন্য পাখি ও কবুতরদের চেয়ে এরা আলাদা। এদের বৈশিষ্ট্য হলো সুন্দর আকৃতি, চমৎকার রং, টানাটানা চোখ আর লম্বা গলা।
কবুতরগুলো কাবাঘরের চারপাশে উড়াউড়ি করলেও তাওয়াফকারী বা মুসল্লিদের কষ্ট হয় এমন কিছু করে না। সারাদিন কাবা চত্বরে আনাগোনা থাকলেও তারা মসজিদের ভেতরে বসবাস করে না এবং রাতেও এখানে থাকে না। এসব কারণে এরা সবার প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়েছে। এমনকি পশু-পাখির মধ্যে নানা ধরনের রোগ-ব্যাধি ছড়ালেও এসব কবুতর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায় না।
এসব কবুতরের উৎসমূল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিভিন্ন মত রয়েছে। কারো মতে, এগুলো সাওর পাহাড়ের হেরা গুহায় বাসা বাঁধা কবুতরের বংশধর। হিজরতের সময় তারা সাওর পাহাড়ে মহানবী (স.) ও আবু বকর (রা.)-এর আশ্রয় নিলে তারা এসে গুহার মুখে বাসা বাঁধে। পুরস্কারস্বরূপ আল্লাহ তাদের বংশধরদের মক্কায় নিরাপদে বসবাসের সুযোগ দেন।
কারো কারো মতে, বিশেষ নিরাপত্তা পাওয়া এসব কবুতর আবাবিল পাখির বংশধর। কাবাঘর ভাঙতে আসা আবরাহা ও তার বাহিনীকে ধ্বংস করতে আল্লাহর পক্ষ থেকে আবাবিল পাখি পাঠানো হয়েছিল। পবিত্র কোরআনের সুরা ফিল এ এই ঘটনার বিবরণ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, তা নুহ (আ.)-এর জাহাজে থাকা কবুতরের বংশধর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post