ওমানের সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিদেশিদের জায়গায় নিজেদের শ্রমিক রাখার প্রস্তাব করেছে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ ও ভারতের লাখো প্রবাসী কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) ওমানের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের নিয়ে শ্রম মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে, প্রবাসী শ্রমিকদের স্থলে স্থানীয়দের রাখার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। একই সঙ্গে, ওমানি জনশক্তিকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সুপারভাইজারি পদগুলোতে নিজেদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়।
ওমানের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কয়েক লাখ প্রবাসী কর্মরত রয়েছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা আট লাখের বেশি। নতুন প্রস্তাবনার বাস্তবায়ন হলে এসব প্রবাসীদের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরতে হতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের।
এদিকে প্রবাসী কোটার লোক কমাতে কুয়েতের সংসদেও সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস হয়েছে। কোন দেশের কত মানুষ কুয়েতে থাকতে পারবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে দেশটির সরকারকে এক বছর সময় দেয়া হয়েছে। খবর ব্লুমবার্গ’র। তবে নতুন এই আইনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল অঞ্চলের মানুষেরা।
নতুন আইনের খসড়ায় আগে বলা হয়েছিল বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান এবং ভিয়েতনাম থেকে কুয়েতের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে মাত্র ৫ শতাংশ শ্রমিক নিয়োগ দেয়া যাবে। ভারতীয়রা ১৫ শতাংশ। শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন এবং মিশর থেকে ১০ শতাংশ। এর বাইরে অন্য দেশ থেকে তিন শতাংশের বেশি কর্মী নেয়া যাবে না।
খসড়ায় যে নির্দেশনার কথা বলা আছে, সেটি অবশ্য এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যদি এটিই চূড়ান্ত হয় তাহলে বাংলাদেশ থেকে ২ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ মানুষ দেশটিতে থাকতে পারবেন। দেশটিতে এখন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বাংলাদেশি আছেন। গত জুনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কুয়েতে মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশের বেশি প্রবাসী থাকতে পারবেন না। এখন আছে প্রায় ৭০ শতাংশ!
এই মুহূর্তে অতিরিক্ত যেসব প্রবাসী কুয়েতে অবস্থান করছেন তাদের বিষয়ে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি। তবে জুলাইয়ের শেষ দিকে গালফ নিউজ জানিয়েছিল, আইন পাস হলে অতিরিক্ত কর্মীদের কুয়েত ছাড়তে হবে না। কিন্তু সংখ্যা কোটায় না আসা পর্যন্ত কোনো কোম্পানি নতুন নিয়োগ দিতে পারবে না।
আরো পড়ুনঃ ইতালি যেতে আবেদন করবেন যেভাবে
বিশ্ব মহামারী করোনায় দিন দিন শ্রমবাজার সংকুচিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ মেয়াদে বৈদেশিক শ্রমবাজারের দরজা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এর সঙ্গে কিছু শ্রমবাজারে তৈরি হয়েছে বাড়তি সংকট। সব মিলিয়ে শ্রমবাজারের সামনে ঘোর অন্ধকার। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বড় ধসের আশঙ্কা করা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই সংকট থেকে বের হতে বিকল্প শ্রমবাজার খুঁজতে শুরু করেছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপই সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
আরো দেখুনঃ ইউরোপ যাওয়ার নিরাপদ রুট ওমান
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post