নগ্ন হয়ে উৎসব পালন হয় জাপানে। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও প্রতিবছর ঘটা করে পালিত হয় ‘নেকেড মেন’ ফেস্টিভ্যাল। তবে এই বছরই সমাপ্তি ঘটল এই ফেস্টিভ্যালের। আগামী বছর থেকে আর অনুষ্ঠিত হবে না এই উৎসব।
জাপান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, জাপানের জনসংখ্যার হার কমতে শুরু করেছে। যুব সম্প্রদায়ের থেকে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপান এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। এর ফলে অগণিত স্কুল, দোকান এবং পরিষেবা বন্ধ করতে হয়েছে। বিশেষ করে ছোট বা গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মধ্যে।
এই উৎসব পালন করা হয় জাপানের কোকুসেকি মন্দিরে। এই মন্দিরের সোমিনসাই উৎসব চন্দ্র নববর্ষের সপ্তম দিন থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হত। যুগ যুগ ধরে বছরের দ্বিতীয় মাসের তৃতীয় শনিবার ঘটা করে পালিত হয় এই উৎসব।
মন্দির কর্তৃপক্ষ এই বার্ষিক অনুষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা মনে করেছে, এই উৎসব স্থানীয় বয়স্কদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই উৎসবের আচারবিধি তাদের জন্য পালন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাপানের ‘নেকেড মেন’ ফেস্টিভ্যালের আরেক নাম সোমিনসাই উৎসব। কোকুসেকি মন্দিরে পালিত হয় এই উৎসব। এই অনুষ্ঠানে জাপানের শত শত পুরুষেরা ছোট সাদা কাপড় জড়িয়ে সামিল হন। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষেরা বরফের পানিতে গোসল করে শুদ্ধ হন। তারপর কয়েক ঘণ্টা ‘জাসো জয়সা’বলে স্লোগান দিতে দিতে মন্দিরের চারপাশে দৌড়াতে হয়।
এরপরে মন্দিরের পুরোহিত মাঠে ১০০ মন্তপূত লাঠি ছড়িয়ে দেন। এই লাঠি সংগ্রহ করার জন্য চেষ্টা করেন পুরুষেরা। কারণ এই অনুষ্ঠানের রীতি অনুযায়ী, যে ওই লাঠি নিতে পারবে তার সারাবছর ভালো যাবে। কিন্তু ওই লাঠি দখল করা মোটেই সহজ হয় না। কারণ লোকসংখ্যার থেকে লাঠির সংখ্যা থাকে কম। ফলে লাঠি হাতানোর জন্য পুরুষদের মধ্যে মারপিট লেগে যায়। শেষমেষ রক্তাক্ত শরীরে শেষ হয় নেকেড ফেস্টিভ্যাল বা উলঙ্গ উৎসব।
‘নেকেড মেন’ ফেস্টিভ্যালে অংশগ্রহণ করেন কম বয়সী বা মধ্যবয়সী পুরুষেরা।কোনও নারী এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেন না। তবে এবার উল্লেখযোগ্যভাবে নারীদের অংশগ্রহণের অনুমতি মিলেছিল। আবেদনের প্রেক্ষিতে এবার ৪০ জন নারীকে নগ্ন হয়ে উৎসবে যোগ দেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল জাপান সরকার।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post