কল্পনা করুন আপনার বাড়ির ঠিক মাঝখান দিয়ে চলে গেছে একটি সীমান্তরেখা। আপনার রান্নাঘর এক দেশে, আর আপনার শয়নকক্ষ আরেক দেশে! অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটিই বাস্তব ঘটনা।
বাড়ির ঠিক মাঝ বরাবর গেছে দুই দেশের সীমান্তরেখা। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, বাড়ির বাসিন্দারা খাওয়াদাওয়া করেন এক দেশে আর ঘুমান আরেক দেশে! বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দুই দেশে অবস্থিত বাড়িটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক রাজার।
বাড়িটি ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে নাগাল্যান্ডের লংওয়া গ্রাম অবস্থিত। কনিয়াক নাগা উপজাতির রাজপরিবার সেখানে বসবাস করে। এই রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয় ১৫ শতকে। দুই দেশে থাকা ওই রাজার বাড়িটি ১০০ বছরের পুরোনো। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে সীমান্ত নির্ধারিত হয়। গ্রামটিতে মিয়ানমার ও ভারত দুই দেশের নাগরিক রয়েছে। কোনো ভিসা ছাড়াই উভয় দেশের ১৬ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন তাঁরা।
এই লংওয়া গ্রামের রাজা বা গ্রামপ্রধানের বাড়ির বুক চিরে চলে গেছে সীমান্ত। ফলে বাড়ির একটা দিক থেকে গেছে ভারতে, অন্যদিক মিয়ানমারে। দুই দেশেরই নাগরিকত্ব ভোগ করেন গ্রামপ্রধান। ভারত বা মিয়ানমার যাওয়ার জন্য তাঁর কোনো ভিসা লাগে না। গ্রামপ্রধানের বাড়ির রান্না আর খাওয়াদাওয়া হয় ভারত অংশে। আর ঘুমাতে হয় মিয়ানমার অংশে। আবার তিনি চাষাবাদও করেন মিয়ানমারে।
গ্রামপ্রধান বিবিসিকে বলেন, ‘আমি হচ্ছি এখানকার প্রধান। আমার বাড়ি দুই অংশে বিভক্ত। আমরা ভারতে খাই, মিয়ানমারে ঘুমাই।’ নাগাল্যান্ডের এই গ্রামটি ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকদের জন্য বেশ পছন্দের জায়গা। পাহাড়, কুয়াশা, মেঘের সৌন্দর্য ছাপিয়েও আদিবাসীদের সংস্কৃতি নাগাল্যান্ডের মূল আকর্ষণ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post