ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কারাগারগুলিতে থাকাকালীন নারী বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন এবং কারাগারেই তাদের সন্তানরা জন্ম নিচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে রাজ্যগুলিতে কারাগারের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে ‘অ্যামিকাস কিউরে’ বা আদালত বন্ধু হিসাবে নিযুক্ত আইনজীবী তাপস ভঞ্জ’র।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টকে এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
তিনি বলেন, “রাজ্যের সংশোধনাগারগুলির (কারাগার) পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়ে যে ছবি উঠে এসেছে সেটা উদ্বেগজনক। সংশোধনাগারে থাকাকালীন নারী বন্দিরা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ছেন। ১৯৬ জন শিশু মায়ের সঙ্গে সংশোধনাগারে রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সংখ্যাটা গত বছর পহেলা এপ্রিল পর্যন্ত। ইতিমধ্যে ওই সংখ্যা হয়তো বেড়েছে বলেই আশঙ্কা করা যায়।”
কলকাতা হাইকোর্টে এই প্রতিবেদন পেশ করার পর দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস গণনম। বিষয়টি ফৌজদারি মামলার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই এর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের জুন মাসে ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি আর সি লাহোটি সুপ্রিম কোর্টকে একটি চিঠি দিয়ে দেশের কারাগারের করুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানিয়েছিলেন।
সে সময় সর্বোচ্চ আদালতকে দেশের কারাগারগুলিতে বন্দিদের মাত্রাতিরিক্ত সংখ্যা, অস্বাভাবিক মৃত্যুসহ সেখানকার বেহাল পরিস্থিতির কথা জানানো হয়েছিল। রাজ্যগুলি যে বন্দিদের প্রতি দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না, সে বিষয়েও উল্লেখ করেছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি।
সে বছর জুলাই মাসে ওই চিঠি ‘জনস্বার্থ রিট পিটিশন’ হিসাবে দায়ের হয়।
“এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের হাইকোর্টগুলির প্রধান বিচারপতিদের নির্দেশ দেয় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করতে এবং সংশোধনাগারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। হাই কোর্ট আমাকে নিয়োগ করে সংশোধনাগারের আবাসিকদের অভাব অভিযোগ শোনার জন্য এবং রাজ্যের প্রতিটি জেলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বলবৎ করতে,” বলেছেন আইনজীবী তাপস ভঞ্জ।
রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরিকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অবশ্য বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, কোনও নির্দিষ্ট কারাগারের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে তাহলে নিশ্চয়ই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post