দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানি কর্মীদের সন্তান নেওয়ার জন্য ৭৫ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮২ লাখ টাকার বেশি) বোনাস দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির নিম্ন জন্মহার মোকাবেলায় এই অভিনব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কোম্পানিটির মতে, অনেক সময় আর্থিক সঙ্গতি না থাকার কারণে অনেক দম্পতি সন্তান নিতে আগ্রহী হয় না। তাই সন্তান লালন-পালন ও তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই কর্মীদের এই বোনাস দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিউল-ভিত্তিক কোম্পানি বুইয়ং সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যেখানে ২০২১ সাল থেকে তাদের কোম্পানিতে কর্মরত নারীদের ৭০টি বাচ্চা জন্ম দেয়ার জন্য সর্বমোট ৫.২৫ মিলিয়ন ডলার পুরষ্কার দেয়া হয়। বুইয়ং কোম্পানির চেয়ারম্যান লি জুং কিউন বলেন, ‘যদি এভাবে প্রজনন হার কমতে থাকে তাহলে আগামী ২০ বছরে আমাদের দেশ অস্তিত্বের সমস্যায় পড়তে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি পরিবারে কয়টি সন্তান থাকবে তা অনেক সময় সেই পরিবারের আর্থিক সঙ্গতির ওপর নির্ভর করে। অনেক সময় দেখা যায়, সন্তান লালন-পালন করা ও তার ভবিষ্যতের বিষয়টি ভাবতে গিয়ে অর্থ সরবরাহ না করতে পারার জন্যও অনেকে বেশি সন্তান নিতে চান না। তাই আমরা কর্মীদের বোনাস দেয়ার কথা ভেবেছি।’
বুইয়ংয়ের মতো দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক বহুজাতিক কোম্পানি ও স্থানীয় কোম্পানিও দেশের জন্মহার বাড়াতে আজকাল এই নীতি অবলম্বন করছে। কুমহো পেট্রোকেমিক্যাল নামে বহুজাতিক কোম্পানিটিও জানায়, তারা তাদের অফিসে কর্মরত নারীদের প্রত্যেকের একটি করে সন্তানের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ডলার বোনাস দেবে।
প্রথম সন্তানের জন্য ৩ হাজার ৮০০ ডলার। দ্বিতীয় সন্তানের জন্য তা বেড়ে দাঁড়াবে ৭ হাজার ৬০০ ডলার। আর তৃতীয় সন্তানের জন্য ১১ হাজার এবং চতুর্থ সন্তানের জন্য দেয়া হবে ১৫ হাজার ডলার।
ফার্মাসিউটিক্যাল ফার্ম ইউহান কর্প প্রথম বাচ্চার জন্য ৭ হাজার ৬০০ ডলার পুরষ্কার ঘোষণা করেছে। জমজ বাচ্চার ক্ষেত্রে তা দ্বিগুন হবে। কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি হ্যানমিগ্লোবাল সম্প্রতি তাদের কর্মীদের সন্তান নেয়ার জন্য বোনাসের ঘোষণা দিয়েছে। তারা তিনটি বাচ্চার জন্য ৩ হাজার ৮০০ ডলার ও চারটি বাচ্চার ক্ষেত্রে তারা দেবে ৭ হাজার ৬০০ ডলার। তাছাড়া মাতৃত্বকালীন ও পিতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়ে দু’বছর করার ঘোষণা দিয়েছে কোম্পানিটি।
এছাড়াও দক্ষিণ কোরিয়ার পরিবারগুলোকে আরও সন্তান নেয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করার জন্য আঞ্চলিক সরকারও এগিয়ে আসছে। সিউলে নারীদের প্রজনন হার অত্যন্ত কমেছে, গত বছর এই হার ০.৭২-এ নেমে এসেছে। যার অর্থ প্রতি ১০০ জন নারীর জন্য, শুধুমাত্র ৭২টি শিশুর জন্ম হবে। যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছে সিউল।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post