রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার ৫ জন যুবক স্বপ্ন দেখেছিলেন উন্নত জীবনের। বসত বাড়ির জমি বিক্রি করে, ঋণ নিয়ে দালালের সাহায্যে ওমানে শ্রমিক হিসেবে পাড়ি দেন। কিন্তু তাদের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছেন কেশরহাট পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড হরিদাগাছি মহল্লার সিদ্দিক কসাইয়ের ছেলে বিপ্লব হোসেন।
তিনি ভুক্তভুগিদের নিকট থেকে ২০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিলেও ওমানে কোনো কোম্পানির সঙ্গে এসব শ্রমিকদের কাজের চুক্তি ছাড়াই দালাল চক্রের কাছে চুক্তিতে বিক্রি করে দেন। আর দেশ ছেড়ে বিদেশে গিয়ে কঠোর পরিশ্রমের পরও পারিশ্রমিক না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। দেয়া হতনা নিয়োমিত খাবারও।
এমন অবস্থায় ওই শ্রমিকরা সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্যত্র বাঙালি শ্রমিকদের কাছে আশ্রয় নেয়। এরপর মালশিয়ান ওই দালালদের ভয়ে অন্যত্র কর্মসংস্থানে লাগতে পারছেন না। ভিসার বৈধতা থাকলেও ছিলনা তাদের বৈধ কর্মসংস্থানের সুয়োগ। যার কারণে তারা খাদ্য ও অর্থ খাদ্য সংকটে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে ওই পাঁচ প্রবাসীর মানবেতর জীবন যাপনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর হতে প্রতারক বিপ্লব হোসেন নিজ এলাকা ছেড়ে ঢাকায় পালিয়ে বেড়ান। এরপরে পারিবারিক হস্তক্ষেপে ওমান থেকে বাড়ি ফিরতে পারেন উপজেলার খোলাগাছি গ্রামের হাকিমের ছেলে হাবিবুর রহমান মিঠু, আমগাছি গ্রামের ফজলের ছেলে সিদ্দিক ও আমগাছি গ্রামের আমদ আলীর ছেলে হোসেন আলী নামে ৩ জন।
এর কয়েকদিন পর গত ৩ ফেব্রুয়ারী সন্ধায় প্রতারক বিপ্লব কেশরহাটে আসলে জনতা তাকে গণধোলায় দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। অবশেষে শ্রমিকদের উদ্ধার করবেন বলে আশ্বস্ত করে পুলিশের কাছ থেকে সাময়িক মুক্তি পাই। তবে ওমানে এখনও মানবেতর জীবনযাপন করছেন উপজেলার পারিলাডাইং গ্রামের হাবিবুরের ছেলে আলমগীর হোসেন ও হাটরা গ্রামের রইচ উদ্দিনের ছেলে অনিক নামে আরো দুজন।
এছাড়াও প্রতারক বিপ্লব হোসেন এক সময় মালয়েশিয়াই শ্রমিক থাকা অবস্থায় প্রতারণা করেন। নানা ফন্দিতে অনেক বাঙালি শ্রমিকদের নিকট থেকে অন্তত ৩০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশে পালিয়ে আসেন। এবার দেশে ফিরে নিজেই প্রতারণার মাধ্যমে মালশিয়াতে লোক পাঠানো শুরু করেন।
শুরুতেই এলাকার প্রায় ১০/১২ জন যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন আরো ২০ লাখ টাকা। যদিও তোপের মুখে সেই টাকার কিছু অংশ ফেরত দিলেও এখনো অনেকেই তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। একসময় এলাকার মানুষদের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে ভিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতেন। যার কারণে এলাকায় প্রতারক হিসেবেই পরিচিত সে।
প্রতারনার শিকার মাসুদ রানা মিলন জানান, বিল্পব আমাদের জীবন শেষ করে দিয়েছে। আমরা পরিবারের থেকে টাকা নিয়ে তার হাতে তুলে দিয়েছি। কিন্তু সে আমাদের টাকা মেরে দিয়ে প্রতারণা করেছে।
এবিষয়ে ফোনে কথা বলতে বিপ্লবকে ফোন দেয়া হলে ফোনে কথা বলতে রাজি না হয়ে সরসরি কথা বলতে চেয়ে ফোন নাম্বার ব্লক করে দেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে অন্য নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সে থানায় বসে কথা বলবে বলে জানালেও পরবর্তীতে তার খবর মেলেনি। এই প্রতারকের শাস্তি চান এলাকাবাসী।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post