মুম্বাই নগরীর উপকণ্ঠে মিরা রোড দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে নিয়মিতই যান ২১ বছরের মোহাম্মদ তারিক। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি এ কাজ করছেন। কিন্তু গত মঙ্গলবার হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের একটি মিছিল তাঁর অটোরিকশা থামায়। যুবকরা, বিশেষ করে কম বয়সের তরুণরা তাঁকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে বেপরোয়াভাবে চড়থাপ্পড়, কিল-ঘুসি ও লাথি মারতে থাকে। এর পর থেকেই তারিক আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন।
আলজাজিরার সঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলছিলেন অটোরিকশাচালক তারিকের ৫৪ বছর বয়সী বাবা আবদুল হক। র্যা লিটি বিভিন্ন চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছিল। র্যা লি থেকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে আরও কয়েক লোক ও দোকানপাটে হামলা হয়। উচ্চস্বরে উগ্র ডানপন্থি গান বাজানোর পাশাপাশি মসজিদের সামনে দিয়ে মুসলিম অঞ্চলগুলো প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি।
গত সোমবার উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন ও ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ উদযাপনের অংশ হিসেবে মুম্বাইয়ে মিছিলটি বের করা হয়। রামমন্দির উদ্বোধনের দিন থেকেই ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও সহিংসতা বেড়েছে, যা ১৯৫০ সালে প্রণীত দেশটির সংবিধানের বিরোধী।
মন্দির উদ্বোধনের পর আগুন দেওয়া হয় উত্তর ভারতের রাজ্য বিহারে কবরস্থানে; দক্ষিণ ভারতে এক মুসলিম ব্যক্তিকে নগ্ন করে ঘোরানো হয়; একটি চার্চের মাথায় উগ্র হিন্দুত্বের পতাকা উড়িয়ে দেওয়া হয় মধ্য ভারতে। গতকাল শুক্রবার ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাককালে এসব ঘটনা ঘটল।
আবদুল হক বলেন, ‘এ দেশ (ভারত) তাঁর কাছে ক্রমেই অপরিচিত হয়ে উঠছে। মুসলিমরা এখানে যেন উচ্ছিষ্ট। মিরা রোডে সেদিন অনেক লোক ছিল। কেউ আমার ছেলেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। কী নিলর্জ্জ সমাজ! এ যেন অন্ধের শহর!’
রামমন্দিরের উদ্বোধন সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। গ্রাম থেকে শহরে– সব স্থানে বড় এলইডি স্ক্রিনে পুরো অনুষ্ঠান দেখানো হয়। মোদি ও তাঁর সমর্থকদের ধর্মীয় মেরূকরণের বক্তব্য ইউটিউব ও সিনেমা হলেও প্রচার করা হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
Discussion about this post