মাহবুবুর রহমান। কওমী মাদ্রাসা থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েছেন, কম্পিউটারের কাজও জানেন। বাবা আবদুল মতিন মসজিদের ইমাম। পরিবারের অন্যরাও বেশ ধার্মিক। তবে গ্রামের অন্য দশজনের মতোই নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে তাই বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ফেজবুকে চটকদার সব বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আলিফ এয়ার ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ভুঁইফোড় এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করেন। কথা ছিলো সৌদিতে মার্কেটিংয়ের কাজ পাবেন, থাকা খাওয়ার ব্যবস্থাও কোম্পানি বহন করবে। তবে ধার কর্যের পয়সায় চড়ে সৌদিতে পা রেখেই বুঝতে পেরেছেন এসব স্বপ্নকথার সবই ফাঁকি।
মাহবুবের সাথে আরও বেশ কয়েকজন একই কায়দায় প্রতারিত হন। নির্ধারিত কাজের কথা বলা হলেও গিয়ে দেখেন কোনো কাজই নেই। ছোট ঘরে গাদাগাদি করে কয়েকশ মানুষকে থাকতে হচ্ছে। নেই খাওয়ার ব্যবস্থাও। অনাহারের যন্ত্রণা তীব্র হলে মাহবুব ও তার সঙ্গীরা কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেটে মসজিদ থেকে খেয়ে ফিরতেন।
মাস দুয়েক ভোগান্তির পর সৌদির পরিচিত এক আত্মীয়ের কাছে রওয়ানা হন মাহবুব। ভাগ্যের নির্মমতায় যাত্রাপথে বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। তার পর থেকে মাহবুবের ঠিকানা হয়েছে হাসপাতালে।
বাবা আবদুল মতিন ছেলেকে বিদেশ পাঠাবেন বলে বিভিন্ন যায়গা থেকে ধার করে টাকা জোগাড় করেছেন। তবুও স্বস্তি ছিলো- অচিরেই সব অভাব কেটে যাবে। তবে হয়েছে উল্টো। সহায় সম্পদ যেটুকু অবশিষ্ট ছিলো তাও শেষ। আবদুল মতিনের চারিদিকে এখন কেবলই অন্ধকার। যারা তার শান্তি কেড়ে নিলো তাদের সঠিক বিচার চান এই আলেম।
মাহবুবের পরিবারের আর কোনো উচ্চাশা নেই। তারা চান ঘরের ছেলে এখন ঘরে ফিরে আসুক। এজন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চাইছেন তারা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post