ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’ উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নাটোরের নলডাঙ্গার মাধনগরের আবদুল্লাহ আল কাফি (১৮)। তিনি পশ্চিম মাধনগর জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক পিতা মো. মাহবুব আলম হোসেন ও মাতা মোছা. পল্লব কান্তি সরদারের একমাত্র ছেলে।
শিক্ষার্থী কাফি পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিকস বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। ট্রেনে নাশকতা ও দুর্ঘটনার বিষয়টি মূল গুরুত্ব দিয়ে এ ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেন তিনি। ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে উদ্ভাবনী চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করে। কিছু দিনের মধ্যেই আসে তার উদ্ভাবনের সফলতা। ট্রেন দুর্ঘটনা পুরোপুরি রোধে তৈরি করে ফেলেন একটি পূর্ণাঙ্গ ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’।
কাফির উদ্ভাবিত রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসটি দেখতে শতশত নারী-পুরুষ ভিড় করছে। ডিভাইসটি আরও গবেষণা করে রেলওয়ের বিভাগের মাধ্যমে স্থাপন করা হলে, ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। তরুণ উদ্ভাবক আবদুল্লাহ আল কাফির সাফল্যে খুশি স্থানীয় এলাকাবাসী ও তার পরিবার।
রেললাইন কোথাও ভেঙে গেলে বা কাটা হলে, সিগনাল বেঁজে উঠবে ও অটোমেটিক্যালি-রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসের মাধ্যমে স্টেশন মাস্টারের কাছে ফোন চলে যাবে। যার ফলে আর ট্রেন দুর্ঘটনার সুযোগ থাকবে না।
রেলে দুর্ঘটনা রোধে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ করে রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেন তিনি। তবে এই ডিভাইসটি আরও শক্তিশালী করার জন্য গবেষণা ও সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার।
আব্দুল্লাহ আল কাফি জানান, বেশ কিছুদিন চেষ্টার পর সফল হন তিনি। প্রতিটা স্টেশনে একটি কন্ট্রোল বক্স স্থাপন ও রেললাইনের সঙ্গে ওয়ারিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ১০ হাজার টাকা। ওই স্টেশনের আওতায় রেললাইন কাটা পড়লে বা ফেটে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কন্ট্রোল বক্সের অ্যালার্ম বাজবে। একই সঙ্গে অ্যালার্ম বাক্সে থাকা মোবাইল থেকে স্টেশন মাস্টারের মোবাইলে যাবে কল।
কৃষক মাহবুব আলম ও মাতা মোছা. পল্লব কান্তি সরদার জানান, সন্তানের এই আবিষ্কারে গর্বিত তিনি। ছেলের আবিষ্কার দেশের ও জনগণের কাজে লাগলে সার্থক তিনি।
নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়াডের মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান রকি জানান, এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে ডিভাইস দেখতে ভিড় করেন। রেলযাত্রাকে নিরাপদ করতে ডিভাইসটি পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি করেন তিনি।
মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার মো. মমিন উদ্দিন প্রামানিক বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এ সমস্ত খুদে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত ডিভাইসগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post