বাংলাদেশ ফুটবল দলের সাবেক কোচ টম সেইন্টফিটের কথা বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের কাছে তেমন পরিচিত নয়। ২০১৬ সালে জামাল ভূঁইয়া-তপু বর্মণদের দায়িত্বে আসা এই বেলজিয়ান কোচ মাত্র ৫৫ দিন দায়িত্বে ছিলেন।
এরপর অনেক পথ পেরিয়ে তিনি এখন গাম্বিয়া জাতীয় দলের কোচ। বাংলাদেশের সাবেক এই কোচ এবার খবরের শিরোনাম হলেন অন্য কারণে। গাম্বিয়া দল এবং তাদের কোচ টম সেইন্টফিট অল্পের জন্য বড় ধরনের বিপদ থেকে বেঁচে গেছেন।
শুরু হচ্ছে আফ্রিকার দেশগুলোর ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই আফ্রিকান কাপ অব নেশনস। এই আসরে অংশ নিতে আয়োজক আইভরি কোস্টে রওনা দিয়েছিল গাম্বিয়ার ফুটবল দল। তবে মাঝ আকাশেই ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়ে যায় দলটি, প্রাণ হারানোর শঙ্কায়ও পরে দলের সদস্যরা। শেষমেশ যাত্রা শুরুর জায়গায় প্রত্যাবর্তন করতে সক্ষম হয় তাদের বহনকারী বিমান।
ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানায়, গাম্বিয়ার রাজধানী শহর বানজুল থেকে আইভরি কোস্টের উদ্দেশে বিমান উড্ডয়নের ৯ মিনিট পরই শুরু হয় যান্ত্রিক গোলযোগ। ধরা পড়ে বিমানে অক্সিজেন সংকটের ব্যাপারটি। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে আবার বানজুলেই বিমান ফিরিয়ে আনেন পাইলট। আর আধা ঘণ্টা থাকলেই মৃত্যু হতে পারত বিমানের সবার। অক্সিজেনের অভাবে প্রায় সব খেলোয়াড় ও কোচ টম সেইন্টফিটের মাথা চক্কর দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। অনেকের প্রাণ হারানোরও শঙ্কা জেগেছিল।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক খেলোয়াড় সাইদি জ্যাঙ্কো ইনস্টাগ্রামে বলেছেন, ‘কয়েকজনের মারাত্মক মাথাব্যথা ও তীব্র মাথা ঘোরানোর সমস্যা হয়েছে।’ অজ্ঞানও হয়ে যান কয়েকজন। এই অবস্থার জন্য দেশটির ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকেও দায়ী করেন তিনি।
বেলজিয়ামের ডাচ ভাষার পত্রিকা ‘এট নিউজব্লাট’কে ভয়ংকর অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন কোচ টম সেইন্টফিট। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই মারা যেতে পারতাম। আমিসহ দলের সবাই খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছিলাম (জ্ঞান হারিয়েছিলাম)। সত্যি বলছি, খুব অল্প সময়ে জন্য স্বপ্ন দেখেছি, কীভাবে আমি মারা গেলাম।
৯ মিনিট পর পাইলট বিমান ঘুরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ, অক্সিজেন সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। জরুরি অবতরণের আগে কয়েকজন খেলোয়াড় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। আরেকটু দেরি হলেই কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়া শুরু হয়ে যেত। আর ৩০ মিনিট এভাবে থাকলে সবাই বিষক্রিয়ায় মারা যেতাম।’
তবে সেইন্টফিটের মন্তব্যকে ‘ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও ধারণা’ উল্লেখ করে প্রাণহানির শঙ্কা জাগার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন জিএফএ প্রধান বাজো, ‘আমার এমন কিছু মনেই হয়নি। এমনকি এটা ক্লিনিক্যালি, সাইন্টিফিক্যালি এবং মেডিক্যালিও প্রমাণিত নয়। আমি অনেকটা তাঁর পাশেই বসা ছিলাম। আমি কাউকে পড়ে যেতে দেখিনি। বিমান যখন উড্ডয়ন শুরু করে, আমি তখনই কয়েকজনকে ঘুমিয়ে পড়তে দেখেছি।’
সেইন্টফিট আরেকটি দাবি ছিল একই বিমানে গাম্বিয়ান দলকে আইভরিকোস্টে যেতে বলা হয়েছে, কিন্তু অধিনায়ক ওমর কোলি ও তিনি রাজি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। এটিও অস্বীকার করেছেন গাম্বিয়ার ফুটবল প্রধান।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post