৪ বছরের ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে গোয়ায় গিয়েছিলেন। তারপর গোয়ার হোটেলেই ছেলেকে খুন করে তার দেহ ব্যাগে ভরে বেঙ্গালুরু চলে এলেন।
তারপর যখন পুলিশ তাঁকে পাকড়াও করল, তখন তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে পাওয়া যায় ছোট্ট শিশুটির নিথর দেহ। AI ল্যাবের সিইও সূচনা শেখ কেন একাজ করলেন তা স্পষ্ট নয়। তবে উচ্চ শিক্ষিত ও বিশেষ পদে কর্মরত এই মহিলার এই কর্মকাণ্ডে হতবাক পুলিশও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শনিবার ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিমে একটি হোটেলে উঠেছিলেন সূচনা শেখ। সোমবার সেই হোটেলে চেক আউট করেন তিনি। হোটেলেরই এক কর্মীকে একটি ট্যাক্সি ডেকে দিতে বলেন বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়ার জন্য। হোটেলকর্মীরা তাঁকে বিমান ধরার পরামর্শ দিলেও তিনি ট্যাক্সি ধরে দেওয়ার উপরই জোর দেন। এরপর ট্যাক্সি এলে ওই মহিলা বড় ব্যাগ নিয়ে একাকী হোটেল থেকে বেরোন।
হোটেলে ওঠার সময় সূচনা শেখের সঙ্গে তাঁর ছেলে ছিলেন। বেরোনোর সময় তিনি একাকী বেরোন। সেটা হোটেলকর্মীরা লক্ষ্য করেছিলেন। তারপর সূচনা যে ঘরে ছিলেন সেখানে ঢুকতে হোটেলের কর্মীরা দেখেন, মেঝেতে চাপ-চাপ রক্ত পড়ে রয়েছে। এরপরই হোটেলকর্মীদের মনে সন্দেহ জাগে। সঙ্গে-সঙ্গে তাঁরা পুলিশে খবর দেন।
এরপর সূচনা শেখের খোঁজ পেতে গোয়া পুলিশ ওই ট্যাক্সিচালকের মোবাইলে ফোন করেন। তাঁর মোবাইলের মাধ্যমে পুলিশ সূচনার সঙ্গে কথা বলে এবং তিনি কোথায় যাচ্ছেন, তাঁর ছেলে কোথায়- সে বিষয়ে জানতে চান। জবাবে সূচনা জানান, তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে ছেলে রয়েছে।
তবে তিনি যে ঠিকানা দেন, সেটা ভুয়ো বলে জানতে পারে পুলিশ। এরপর পুনরায় পুলিশ ওই ট্যাক্সিচালককে ফোন করে এবং তাঁর ফোনের লোকেশন টাওয়ার ধরে জায়গা ট্র্যাক করে। বিষয়টি বুঝতে পারেননি সূচনা। গোয়া পুলিশ ওই ট্যাক্সিচালককে নিকটবর্তী থানায় গাড়ি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
সেই মতো ওই চালক বেঙ্গালুরু থেকে ২০০ কিমি দূরে চিত্রদূর্গ থানায় গাড়ি নিয়ে যায়। ততক্ষণে চিত্রদূর্গ থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে গোয়া পুলিশ। সেই খবরের ভিত্তিতে কর্নাটক পুলিশ সূচনা শেখকে গ্রেফতার করে। সূচনার ব্যাগে তল্লাশি চালাতে তাঁর ছেলের দেহও উদ্ধার হয়। যা দেখে হতবাক হয়ে যায় পুলিশ। বিশেষত, পুলিশ যখন সূচনা শেখের শিক্ষা, কেরিয়ার সম্পর্কে জানতে পারে।
সূচনা শেখ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো। ডেটা গবেষক হিসাবে তাঁর ১২ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সি (AI)-তে ১০০ জন বুদ্ধিমতী মহিলার মধ্যে একজন ছিলেন। বর্তমানে বেঙ্গালুরুর এক AI ল্যাবের সিইও। তাঁর স্বামী বেঙ্কট রমনও এআই ডেভলপার।
এরকম ব্যক্তি-জীবনের মধ্যে থেকে ৩৯ বছর বয়সি সুচনা কেন ছেলেকে খুন করলেন এবং কীভাবে ছেলের দেহ সঙ্গে নিয়ে একরাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে এলেন, তা ভেবে পাচ্ছে না কেউ। গোটা ঘটনায় সূচনা শেখের মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। গোটা ঘটনার তদন্তে সূচনাকে পুনরায় গোয়া নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সেখানকার পুলিশ। তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে গোয়া পুলিশ জানিয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post