বর্তমানে, বোয়িং বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিমান নির্মাণকারী সংস্থা। মার্কিন এই সংস্থাটি প্রতিবছর বিশ্বের একাধিক জনপ্রিয় বিমান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার জন্য বিমান নির্মাণ করে থাকে। বাংলাদেশেও, তিনটি জনপ্রিয় বিমান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা, তাদের পরিষেবা প্রদানে বোয়িং-এর নির্মিত বিমানগুলির উপর নির্ভরশীল।
প্রদান করতে নিয়মতি এই সংস্থার তৈরি বিমানগুলির ব্যবহার করছে। কিন্তু, বর্তমানে যে সমস্ত সংস্থা বোয়িং-এর তৈরি বিমান ব্যবহার করছে, তাদের মধ্যে রীতিমতো দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। কারণ, বিগত কিছু সময় ধরে একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছে এই সংস্থাটির পক্ষ থেকে নির্মিত বিমানের মধ্যে।
একটি সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এই মার্কিন সংস্থাটির নির্মিত বিমানে ভুলভাবে ড্রিল করা গর্ত, আলগা রডার বোল্ট এবং সম্প্রতি মাঝ আকাশা থাকা অবস্থায় বিমানে দরজা উড়ে যাওয়ার ঘটনার মতো একাধিক চাঞ্চল্যকর বিষয় উঠে এসেছে। বিগত কয়েক মাসের মধ্যে বোয়িং-এর পক্ষ থেকে নির্মিত একাধিক বিমান নানা গুনগত ত্রুটির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে মার্কিন দেশের সর্বাধিক বিমান রফতানিকারক সংস্থাটির বিমান নির্মাণের দক্ষতা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্নচিহ্ন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বোয়িং 737 ম্যাক্স বিমানটিকে নিয়ে চিন্তায় পড়েছে বিমান সংস্থাগুলি।
সাম্প্রতিক সময়ে কি দুর্ঘটনা ঘটেছে?
মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থাটির নির্মিত বিমানে সর্বশেষ এবং সবচেয়ে গুরুতর দুর্ঘটনাটি ঘটেছে জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখের সন্ধ্যায়। শুক্রবার পোর্টল্যান্ড থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার ওন্তারির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল আলাক্সা এয়ারলাইন্সের বোয়িং 737 ম্যাক্স বিমান।
বিমানটি টেকঅফ করার কিছুক্ষন পরেই মাঝ আকাশে এটির গোটা একটি দরজার আকারের প্যানেল উড়ে যায়। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিমান চালক বিমানটিকে নিয়ে ফেরার পথ ধরেন। জরুরী অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিমানটিকে পুনরায় পোর্টল্যান্ডে অবতরণ করানো হয়।
বিমানে মোট ১৭৪ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু মেম্বার ছিলেন। ১৮০ জনের মধ্যে কারুর কোনরকম ক্ষতি না হলেও কার্যত সাক্ষাৎ মৃত্যু কে সামনে থেকে দেখেছেন তাঁরা। ১৬,০০০ ফিট উচ্চতায় থাকাকালীন উড়ে যায় বিমানের অংশটি। হাওয়ার দাপটের কারণে ভাঙা অংশ দিয়ে পাশের একটি আস্ত আসন উড়ে চলে যায়।
এই ঘটনাটির পরেই দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় ওই দেশের বিমান পরিষেবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে। দুর্ঘটনাটি ঘটার 24 ঘন্টার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিষেবায় সক্রিয় থাকা বোয়িং 737 ম্যাক্স 9 বিমানের সম্পূর্ণ ফ্লিট সহ এই ভেরিয়েন্টটির মোট ১৭১টি বিমানের ব্যবহার আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার ফলে জোর ধাক্কা খেয়েছে এই বিমান নির্মাণকারী সংস্থাটির ভাবমূর্তি।
প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্থিরতা চলার পর কোম্পানিটিকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টা করছিলেন বোয়িং-এর সিইও ডেভ ক্যালহাউন। কিন্তু আলাস্কা এয়ারের এই ঘটনাটি তাঁর প্রচেষ্টায় একটি বিরাট বড় ধাক্কা দিয়েছে। নতুন বছরের শুরুর সময়টিকে তিনি কোম্পানির পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন।
বোয়িং এখন কার্যত পাঁচ বছর আগে হওয়া দুটি মারাত্মক 737 ম্যাক্স বিমানের ক্র্যাশের ঘটনার পর তৈরি হওয়া চাপের পুনরাবৃত্তি অনুভব করছে যা কোম্পানির প্রতি গ্রাহকদের আস্থাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল।
ইতিমধ্যেই এই গভীর সংকটকালীন মুহূর্তের মোকাবিলা করতে শুরু করেছে সংস্থাটি। মঙ্গলবারেই কোম্পানির কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেছেন ডেভ। কোম্পানিটি পুনরায় তার নিরাপত্তা ও গুনমানের প্রতি গ্রাহকদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বদ্ধপরিকর।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post