নতুন বছরের এক সপ্তাহও পার হয়নি৷ এর মধ্যেই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ভূমধ্যসাগরে থাকা উদ্ধারকারী জাহাজগুলো। গত কয়েকদিনে ভূমধ্যসাগরে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ভাসমান অবস্থা থেকে অন্তত ২০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে তারা। জার্মান বেসরকারি সংস্থা সি-ওয়াচ এবং সি-আইয়ের জাহাজগুলো এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করে ইতালির নির্ধারিত বন্দরে নিয়ে গেছে।
উদ্ধারকারী জাহাজ সি-আই ৪ বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিল। গত ২৬ ডিসেম্বর ইতালির লাম্পেদুসার উপকূল থেকে ১০৬ জনকে উদ্ধার করে জাহাজটি। এদের মধ্যে রয়েছে ৪৫ জন শিশু, যাদের অনেকেই আবার অভিভাবকহীন। সংস্থাটির আরেকটি জাহাজ সি-আই ৫ গত সপ্তাহে দুটি আলাদা অভিযানে মধ্য ভূমধ্যসাগর থেকে ২০০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে ১১৯ জন ছিল অন্তত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। এদের মধ্যে ৩২ জন শিশু অভিভাবকহীন, যাদের একজনের বয়স মাত্র তিন বছর।
উত্তর আফ্রিকা থেকে মধ্য ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি– এই যাত্রাপথটি ২০২৩ সালে অনিয়মিত অভিবাসনের সবচেয়ে ব্যস্ততম পথ হয়ে উঠেছে। বেশিরভাগই অভিবাসনপ্রত্যাশীই সাগরের ওপারে আফ্রিকার দেশ লিবিয়া বা তিউনিশিয়া থেকে যাত্রা করে থাকেন।
ইতালি সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ১ লাখ ৫৫ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশী ইউরোপীয় দেশটিতে পৌঁছাছেন। তার আগের বছরের তুলনায় এই সংখ্যা অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি।
মধ্য ভূমধ্যসাগরের এই রুটটিকে ‘পৃথিবীর অন্যতম বিপজ্জনক অভিবাসন পথ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে সি-আই। বাস্তবতাও তাই বলে। ছোট ছোট নৌকায় করে সাগরের ভয়ংকর উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে যাত্রা করেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। নিজ দেশের দারিদ্র্য, রাজনৈতিক অস্থিরতা বা সংঘাত থেকে বাঁচতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সাগরে নামেন তারা।
তাদের কেউ কেউ হয়তো ভাগ্যবান, শেষ পর্যন্ত ইউরোপে পৌঁছাতে পারেন। যদিও অনিশ্চয়তা পিছু ছাড়ে না তাদের। তবে অনেকেরই সলিল সমাধি হয় সাগরজলে।
আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার হিসাবমতে, গত বছরে শুধু ভূমধ্যসাগরেই অন্তত ২ হাজার ৭৫০ জন নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরেও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post