আসমানি কিতাব পবিত্র কুরআনুল কারীম। সর্বশেষ নবীর উপর নাযিলকৃত এই ঐশিগ্রন্থ যেমন মানবজাতির জীবন বিধান, তেমনি অলৌকিকতায় ভরা। কুরআনের বানি শুনে কাফের থেকে মুসলমান হওয়া, শত্রু স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার মতো অনেক কারামতের কথাই আমরা জানি। কুরআনের আয়াতের উসিলায় অনেককে রোগমুক্ত হতেও দেখি আমরা। সম্প্রতি মৃত ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা একজনের পাশে কুরআন তেলাওয়াতের পর জেগে উঠার মতো অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে গত ১৪ ই সেপ্টেম্বর ঢাকার ফরাজি হাসপাতালের আইসিইউতে।
ফরাজি হাসপাতালশরীয়তপুর জেলার বয়োবৃদ্ধ মনির হোসেন হাওলাদার (৫২) দীর্ঘ ৫ দিন উক্ত হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছিলেন। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রোগীর নিকটাত্মীয় এবং ডাক্তারের পরামর্শে রাত ১১ টায় তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। সকলেরই ধারনা ছিলো তিনি হয়তো আর এই দুনিয়াতে নেই
গভীর রাতে আইসিইউতে পবিত্র কুরআনের সুরা ইয়াসিন তেলাওয়াত শুনে তিনি চেতনা ফিরে পান। যখন তাকে মৃত্যু ভেবে লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়েছে। এমতাবস্থায় অলৌকিকভাবে সুরা ইয়াসিনের তেলাওয়াত শুনে সুস্থ হয়ে যাওয়ায় আশ্চর্য হয়েছেন তার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ও।
প্রবাস টাইমকে ঘটনার বিস্তারিত জানাচ্ছেন ডাঃ নুরুল ইসলাম শিকদারউক্ত হাসপাতালের আইসিইউ প্রধান নুরুল ইসলাম শিকদার প্রবাস টাইমকে বলেন, “আমাদের মেডিক্যাল সাইন্স অনুযায়ী তিনি ৯৯.৯৯ মৃত্যু। তার বাঁচার কোনো সম্ভাবনাই ছিলোনা। আমরা মেডিক্যাল বোর্ড বসে সিদ্ধান্ত নিলাম তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলার। অবশেষে চিকিৎসক বোর্ডের সিদ্ধান্ত এবং রোগীর আত্মীয়দের কথা মতো রাতে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। সাধারণত লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়ার পর এই ধরনের রোগী বাঁচেনা। এরপরেও আমি শেষ বারের মতো ধর্মীয় ভাবে চিন্তা করে দেখলাম ব্যক্তিটি মারা যাবে, সুতরাং তার মৃত্যুর সময় যাতে কষ্ট কম হয়, এ জন্য আমি ওজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে তার পাশে এসে সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করতেছিলাম। এমতাবস্থায় হঠাত দেখি সে নাড়াচাড়া শুরু করছে! যে ব্যক্তি গত ৫ দিন লাইফ সাপোর্টে রেখেও তার জ্ঞান ফেরানো যায়নি, সে ব্যক্তি হঠাত সূরা ইয়াসিনের তেলাওয়াত শুনে জ্ঞান ফেরার এমন অলৌকিক ঘটনায় আমি সহ গোটা হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা অবাক হয়ে যাই। সাথেসাথে রোগীর আত্মীয় সজনকে খবর দিলে তারাও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। আমি আমার ৭বছরের আইসিইউ জীবনে এমন ঘটনা প্রথম দেখলাম। আমি মনেকরি এই ঘটনায় সৃষ্টিকর্তার প্রতি মানুষের আরো বেশি বিশ্বাস স্থাপন হবে।
প্রবাস টাইমকে ঘটনার বিস্তারিত জানাচ্ছেন রোগীর স্ত্রী ও মেয়েএমন অলৌকিক ঘটনায় বিস্মিত গোটা হাসপাতালের অন্য রোগী সহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ ইমন ফরাজি বলেন, “আমাদের আইসিইউতে প্রতিদিন রাতেই পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। ওইদিন সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াতের সময় সে অলৌকিকভাবে নাড়াচাড়া শুরুকরে, যা ছিলো সকলের জন্য অপ্রত্যাশিত। আলহামদুলিল্লাহ সে এখন সুস্থ।
মনির হোসেন হাওলাদারের দাফন কাফনের সকল ব্যবস্থা করার পরেও তার জীবিত হওয়ার খবর শুনে অবাক হয়ে তার স্ত্রী কানিজ ফাতিমা লিপি (৪৫) ও তার মেয়ে মাসুমা আক্তার নিতু (২২)। তার স্ত্রী প্রবাস টাইমের একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান, “আমরা তার মরদেহ নিতে গাড়ি রেডি করে এবং কোন ফেরিতে কিভাবে শরীয়তপুর যাবো, কোথায় দাফন করবো এবং জানাজা কখন কোথায় হবে এইসব ঠিক করে ফেলেছিলাম। এমনকি মসজিদের মাইকে তার মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে তার এমন অলৌকিকভাবে বেচে যাওয়ার কথা শুনে আমাদের এখনো যেনো বিশ্বাস হচ্ছেনা।
প্রবাস টাইমকে ঘটনার বিস্তারিত জানাচ্ছেন হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ আনোয়ার ফরাজি ইমনতার স্বামীর (রোগীর) এমন কোনো ভালো কাজ করতেন কিনা যা আপনি তার স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ জানতেন না এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “আমার স্বামী কখনো নামাজ বাদ দিতোনা। শত সমস্যা এমনকি অসুস্থ অবস্থায় আইসিইউতেও তিনি নামাজ বাদ দিতেন না। তিনি সবসময়ই নামাজ পড়তেন। আমার মনেহয় তার এই ভালো কাজের জন্য আল্লাহ তাকে পুনরায় আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিয়েছেন।”
সেই রোগী এখন কথা বলছেন তার মেয়ের সাথেআরো পড়ুনঃ অক্টোবর থেকে ওমানে নিয়মিত ফ্লাইট চালু করবে বিমান
আরো দেখুনঃ ওমান প্রবাসীদের জন্য দারুণ সুখবর
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post