গাজায় ইসরাইলি হামলার অবসান এবং বন্দীদের মুক্তি দেয়া নিয়ে মিসর যে প্রস্তাবটি দিয়েছে, সেটি প্রত্যাখ্যান না করে সেটাকে ভিত্তি ধরে আলোচনা করতে প্রস্তুত ইসরাইল। কয়েকটি হিব্রু মিডিয়ায় এ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলি কর্মকর্তারা।
সৌদি নিউজ সাইট আশারক অনুযায়ী, মিসরীয় প্রস্তাবে বৈরিতার অবসান এবং তিন ধাপে বন্দীদের মুক্তির কথঅ বলা হয়েছে। সাইটটি কায়রোতে মিসরীয় এবং হামাসের সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। এতে ইতোমধ্যেই ২০ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে। অন্যদিকে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস এবং অন্যান্য গ্রুপের হাতে এখনো শতাধিক ইসরাইলি বন্দী রয়েছে। ৭ অক্টোবর তাদেরকে আটক করা হয়।
মিসরীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে দুই সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি থাকবে। এটি তিন থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। এ সময় গাজা থেকে ৪০ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে। এদের মধ্যে নারী, শিশু এবং প্রবীণরা থাকবে। আর অসুস্থতা ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবে। এর বিনিময়ে ইসরাইল ১২০ ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দীকে মুক্তি দেবে। তারা হবে একই শ্রেণীর লোক। এ সময় বৈরিতা বন্ধ থাকবে, ইসরাইলি ট্যাংকগুলো প্রত্যাহার করা হবে, মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে।
প্রস্তাবের দ্বিতীয় ধাপে ফিলিস্তিনি গ্রুপগুলোর মধ্যকার বিভাজন দূর করার জন্য ‘ফিলিস্তিনি জাতীয় সংলাপ’ শুরু হবে। বিশেষ করে ফাতাহর প্রাধান্যপূর্ণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং হামাসের মধ্যে আলোচনা হবে। এর মাধ্যমে পশ্চিম তীর ও গাজায় একটি টেকনোক্র্যাট সরকার গঠন করার চেষ্টা হবে। এই সরকারই গাজার পুনর্গঠন তদারকি করবে, ফিলিস্তিনি পার্লামেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করবে।
মিসরীয় প্রস্তাবের তৃতীয় ধাপে একটি ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এ সময় সৈন্যসহ বাকি ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে। এর বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারগুলোতে আটক নির্দিষ্ট সংখ্যক হামাস এবং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গ্রুপেরসহ নিরাপত্তা বন্দীদের মুক্তি দেয়া হবে। সম্ভাব্য মুক্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে মারাত্মক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত এবং ৭ অক্টোবরের পর আটক ব্যক্তিরাও থাকবে। এই পর্যায়ে ইসরাইল গাজা উপত্যকা থেকে তার বাহিনী সরিয়ে নেবে এবং বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীদেরকে তাদের বাড়িতে ফিরতে দেবে।
এদিকে শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) হামাসের পলিটব্যুরো নেতা ইসমাইল হানিয়া কাতারে তার আবাসস্থলে ফিরে গেছেন। আর রোববার (২৪ ডিসেম্বর) মিসরীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার জন্য কায়রো গেছেন গাজার ইসলামিক জিহাদের একটি প্রতিনিধি দল।
একইসাথে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসকে ধ্বংস না করা পর্যন্ত গাজায় হামলা থামানো হবে না বলে ফের ঘোষণা করেছেন। তিনি গাজায় ইসরাইলি অভিযানের তিনটি লক্ষ্যের কথা জানান। এগুলো হচ্ছে হামাসকে ধ্বংস করা, গাজার ক্ষমতা থেকে হামাসকে উৎখাত করা এবং পণবন্দীদের মুক্ত করা।
তবে নেতানিয়াহু বেশ চাপে আছেন। রোববার (২৪ ডিসেম্বর) তেল আবিবে গাজায় আটক ইসরাইলি সকল বন্দীর মুক্তির জন্য চুক্তি করতে হাজার হাজার লোক বিক্ষোভ করেছে। অবশ্য, উগ্রপন্থীরা এ ধরনের কোনো চুক্তি না করার জন্য হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post