দালালের খপ্পরে পড়ে চার যুবক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে চার যুবক মালয়েশিয়াতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে পরিবার জানিয়েছে। ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ফুলবাড়িয়া মধ্যপাড়ার মৃত কুটি গেদা মোল্লার ছেলে আতিক মোল্লার বিরুদ্ধে এই দালালির অভিযোগ উঠেছে।
চার যুবকের পরিবারের সদস্যরা জানান, উপজেলার মধ্য ফুলবাড়িয়া এলাকার ফেলু মোল্লার ছেলে আলমগীর মোল্লার কাছ থেকে কনস্ট্রাকশনে ভালো বেতনে কাজের কথা বলে প্রায় ৫ লাখ টাকা নেন আতিক। আতিক মোল্লার চাহিদামতো ঘটিবাটি সব বিক্রি করে এবং চড়া সুদে বিভিন্ন স্থান থেকে টাকা জোগাড় করে দেওয়া হয়। চার মাস আগে মালয়েশিয়া গেলেও কোনো টাকা পাঠাতে পারছেন না আলমগীর। প্রায় প্রতিদিন পাওনাদাররা বাড়িতে হাজির হয়। চার মেয়ে নিয়ে আলমমগীরের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অপরদিকে কাজ না পেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে কোনো রকমে মালয়েশিয়াতে বেঁচে আছেন আলমগীর।
স্থানীয় অপর যুবক সোনা মিয়ার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে এক বছর ঘুরিয়ে মালয়েশিয়ায় পাঠান আতিক। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ও সুদে টাকা জোগাড় করে তিনি বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। বিদেশের মাটিতে ৬ মাস থাকলেও কোনো কাজ জোটে নাই তার ভাগ্যে। দেনাদারদের ভয়ে সোনা মিয়ার স্ত্রী বাড়িছাড়া। ওদিকে সোনা মিয়া ৬ মাস যাবৎ কোনো কাজ না পেয়ে অন্য প্রবাসীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে চলছেন।
বিদেশফেরত প্রবাসী স্থানীয় হেমায়েতকে মালয়েশিয়ার বিখ্যাত প্যাটোনাস কোম্পানিতে কাজ দেওয়ার কথা বলে ৫ লাখ টাকা নিয়ে প্রবাসে পাঠান আতিক মোল্লা। ভাগ্যবদলের আশায় প্রবাসে পাড়ি জমানো এই যুবক ৫ মাস যাবত বন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন মালয়েশিয়ায়। দেশে গ্রামের বাড়িতে তার স্ত্রী-কন্যা কষ্টে দিন পার করছেন। ভালো কাজ অথবা দেশে ফেরত আসতে চান হেমায়েত। সামিউল নামের অপর এক যুবক মালয়েশিয়ায় এবং দেশে তার পরিবার একইভাবে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
এ ছাড়া স্থানীয় মোমরেজ শেখ, বজলু সর্দার, ইয়াছিন, সজিবের মমো আরও কিছু নিরীহ যুবকের কাছ থেকে আতিক অংকের টাকা নিয়ে তাদের প্রবাসে পাঠাতে পারছেন না বলে অভিযোগ। কিন্তু আতিক প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু করতে পারছেন না। কেউ কিছু বললে তাকে মামলা হামলার হুমকি দিচ্ছেন আতিক, আবার অনেকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ।
এ বিষয়ে আতিক মোল্লা বলেন, ‘আমার মাধ্যমে তারা বিদেশে যায়। কোম্পানি তাদের পাসপোর্ট রেখে ফটোকপি দিয়েছে। কাজ না থাকায় কোম্পানি তাদের বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াচ্ছে। কোনো প্রবাসীর পরিবারের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি। আমি আরও তাদের পরিবারকে চাল-ডাল কিনে দিচ্ছি।’ তবে কেউ আইনি ব্যবস্থা নেননি। সালথা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post