দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন কুয়েতের আমির শেখ নওয়াফ আল-আহমেদ আল-সাবাহ। তাঁর মৃত্যুতে কুয়েত সরকার ৪০ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। এছাড়াও দেশটিতে তিনদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন আমির হিসেবে তার সৎ ভাই মিশাল আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহর নাম ঘোষণা করা হয়। ৮৩ বছর বয়সী মিশাল এর আগে দেশটির ক্রাউন প্রিন্সের দায়িত্বে ছিলেন।
কুয়েতের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা কুয়েত নিউজ এজেন্সি (কুনা) জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) থেকে আবারও সরকারি অফিসের কার্যক্রম শুরু হবে। এ ছাড়া আগামী ৪০ দিন রাষ্ট্রীয় শোক চলার সময় দেশের সব প্রতিষ্ঠানে পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
আলাদা এক ঘোষণায় কুয়েতের রয়্যাল কোর্ট প্রয়াত আমির শেখ নওয়াফের নামাজে জানাযা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে। ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে, কাল রোববার বিলাল বিন রাবাহ মসজিদে স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় শেখ নওয়াফের জানাযা হবে। এরপর তাকে কবরস্থ করা হবে। ওই সময় শুধুমাত্র তার পরিবারের সদস্যরা থাকবেন।
নতুন আমির শেখ মিশাল ও রাজ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ও মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল-বিকেল শোক গ্রহণ করবেন। শেখ নওয়াফ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কুয়েতের আমির হিসেবে শপথ নেন। এর আগে তার ভাই শেখ সাবাহ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ দেশটির আমির ছিলেন। তিনি ৯১ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান। তারপর নওয়াফ কুয়েতের আমির হোন।
শেখ নওয়াফ ৫৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে কুয়েতের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৬২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫ বছর বয়সে তিনি হাওয়ালির গভর্নর হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯ মার্চ ১৯৭৮ পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৮ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন। উপসাগরীয় যুদ্ধে কুয়েতের স্বাধীনতার পর শেখ নওয়াফ ১৯৯১ সালের ২০ এপ্রিল শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৯৯২ সালের ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৪ সালের ১৬ অক্টোবর শেখ নওয়াফ কুয়েত ন্যাশনাল গার্ডের উপপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৩ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। একই বছর শেখ নওয়াফ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পুনরায় গ্রহণ করেন যতক্ষণ না ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর আমিরি ডিক্রি জারি করা হয়। তখন তাকে কুয়েতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। উপসাগরীয় ও আরব দেশগুলোর আরব রাষ্ট্রসমূহের সহযোগিতা কাউন্সিলের মধ্যে জাতীয় ঐক্যকে সমর্থন কারী কর্মসূচীকে সমর্থন করতে শেখ নওয়াফ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post