বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়া দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমানো ২৫-৩০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক চুক্তি অনুযায়ী কাজ পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের বেশিরভাগ বর্তমানে থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। অনেকে আবার উপায় না পেয়ে দেশ থেকে টাকা নিয়ে দৈনন্দিন চাহিদাও মেটাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ দিকে যেসব শ্রমিক মালয়েশিয়ায় গিয়ে কাজ না পেয়ে মাসের পর মাস বেকার সময় কাটাচ্ছেন ইতোমধ্যে তাদের কারো কারো পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশনে দেশটির নিয়োগকর্তা এবং দুই দেশের এজেন্টের নাম ঠিকানা উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
কিন্তু অধিকাংশ কর্মীর অভিযোগের সুরাহা বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা করতে পারেননি। যার ফলে দেশটির বনজঙ্গলসহ নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকাদের ভোগান্তি প্রতিনিয়ত আরো বাড়ছে।
যদিও মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটির দায়িত্বশীল একজন নেতা শুক্রবার( ৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বলেন, শ্রমিকদের কাজ না পাওয়া এবং বিশৃঙ্খলার ব্যাপারে বলেছিলেন, আমার জানা মতে, বাংলাদেশ হাইকমিশন নয়, যারা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন তাদের চাপাচাপির কারণে মালয়েশিয়াতে যাওয়ার পর ২৮-৩০ হাজার শ্রমিক জবলেস অবস্থার মধ্যে আছে।
তাদের বেশির ভাগই কনস্ট্রাকশন ও ক্লিনিং কোম্পানির শ্রমিক। বরং হাইকমিশন সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ পাওয়ার পর ২৮ হাজারের মতো কর্মীর সত্যায়ন দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু ঢাকা থেকে উপরের চাপের কারণে হাইকমিশনের মিনিস্টার (শ্রম) নাজমুছ সাদাত এসব ফাইল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সোমবার রাত ৭টার দিকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর উপপরিচালক (ডিডি) ও মালয়েশিয়া চ্যাপ্টারের বহির্গমন শাখার অন্যতম কর্মকর্তা মো: সাজ্জাত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে এই মুহূর্তে মালয়েশিয়াগামী কর্মীর সঠিক তথ্য নেই। তবে সম্ভবত চার লাখ বা চার লাখ পাঁচ হাজারের মতো হতে পারে। বিএম ট্র্যাভেলস নামক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে চার মাস ধরে কাজ পাচ্ছেন না- এমন ভিডিও লিংক পাঠানোর বিষয়ে অবগত করলে তিনি সংশ্লিষ্ট এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে সঠিক বক্তব্য নেয়ার অনুরোধ জানান।
এরপর তিনি বলেন, আমার জানা মতে, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারটি সুন্দরভাবেই তো চলছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেশটিতে কর্মীরা যেতে পারছে। যারা গেছেন তারা ভালো আছেন। আর যারা কাজ পাননি তাদের পক্ষ থেকে দু-চারটি অভিযোগ এসেছে আমাদের কাছে। এর বিপরীতে এজেন্সি কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি আমাদের পক্ষ থেকে জানার চেষ্টা এবং সমাধান করা হচ্ছে।
মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থান বাজার টিকিয়ে রাখতে হাইকমিশন, এজেন্সি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। বর্তমানে ৩০ হাজার শ্রমিকের চাকরি নেই বলে অভিযোগ রয়েছে, তবে এই সংখ্যাটি এত বেশি নাও হতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post