সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের কাছাকাছি একটি এলাকায় নির্মিত হচ্ছে নতুন একটি পর্যটন নগরী, যার নাম কিদ্দিয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার, দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই শহরের রূপরেখা ও প্রধান আকর্ষণগুলো প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিদ্দিয়া ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি যুবরাজ মোহাম্মদ। তাঁর দেওয়া রূপরেখা অনুযায়ী, নির্মাণাধীন শহরটি বিনোদন, খেলাধুলা ও সংস্কৃতির জন্য খুব দ্রুত সারা বিশ্বের গন্তব্য হয়ে উঠবে। সৌদি আরবের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতেও সহায়তা করবে এই শহর।
যুবরাজ জানান, কিদ্দিয়া শহরটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে, যেন এটি জীবনের মান উন্নত করে। পাশাপাশি এটি সৌদি আরবের রিয়াদকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি অর্থনীতির একটিতে পরিণত করবে।
সৌদি আরবের ‘ভিশন-২০৩০’ বাস্তবায়নের পথে কিদ্দিয়া শহর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই ভিশনের লক্ষ্য হলো, বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি সৌদি আরবের অর্থনীতির উন্নয়ন, তেলের আয়ের ওপর দেশটির নির্ভরতা কমানো এবং সৌদি যুবকদের জন্য হাজার হাজার কাজের সুযোগ তৈরি করা।
ভিশন বাস্তবায়নের পথে সৌদি আরবের যেসব প্রকল্প জনবিনিয়োগের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠছে, সেগুলোর মধ্যে কিদ্দিয়া শহর অন্যতম প্রধান। এটি স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিষয়টি রাজধানী রিয়াদকে একটি সুবিধাজনক অবস্থানও এনে দেবে। ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার নির্মাণ ব্যয়ের এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে।
কিদ্দিয়া শহরের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে থাকবে—খেলা। গত কয়েক দশকের গবেষণায় দেখা গেছে, জ্ঞানের বিকাশ, মানসিক অভিব্যক্তি, সামাজিক দক্ষতা, সৃজনশীলতা এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য খেলাধুলা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বলা যায়, কিদ্দিয়া শহরটি খেলার শহর হিসেবে গড়ে উঠছে। পাশাপাশি এই শহরে থাকবে বিনোদনের সব ব্যবস্থা। কারণ, সমাজে বিনোদনমূলক কার্যকলাপের ইতিবাচক প্রভাবও দেখা গেছে। মানুষে মানুষে বিভাজন দূর করে সহানুভূতি সৃষ্টি ও সামাজিক সংহতি বাড়াতে ভূমিকা রাখে বিনোদন।
মোদ্দাকথা হলো, কিদ্দিয়া শহরটি এমন একটি গন্তব্য হতে যাচ্ছে, যেখানে খেলাধুলা, বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে অফুরন্ত মজা উপভোগ করবে স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীরা। ৩৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে নির্মিত এই শহরে নির্মাণ করা হচ্ছে ৬০ হাজার ভবন। শহরটিতে বসবাস করবে অন্তত ৬ লাখ মানুষ।
বলা হচ্ছে, কিদ্দিয়া শহরে ৩ লাখ ২৫ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হবে। দেশজ উৎপাদনে এই শহর বছরে ১৩৫ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের পণ্য যোগ করবে। আশা করা হচ্ছে, শহরটিতে প্রতিবছর ৪ কোটি ৮০ লাখ পর্যটকের সমাগম হবে।
আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী রিয়াদের কেন্দ্র থেকে কিদ্দিয়া শহরটির দূরত্ব ৪০ মিনিটের পথ। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের দক্ষিণ-পশ্চিমে তুওয়াইক পর্বতমালার পাদদেশে নির্মিত হচ্ছে একটি নতুন শহর। এই শহরটি গেমিং এবং ই-স্পোর্টসের জন্য একটি নতুন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। থাকবে বিভিন্ন খেলার বেশ কিছু স্টেডিয়াম এবং বিশ্বের বৃহত্তম অলিম্পিক জাদুঘর। শহরটির এসব সুযোগ-সুবিধার বেশ কিছু অংশ আগামী দুই বছরের মধ্যে চালু হয়ে যাবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post